দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকা বা ভারী জিনিস তোলার কারণে কোমর এবং পিঠের ব্যথার সমস্যা এখন পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই অত্যন্ত সাধারণ। অনেকে এই ব্যথাকে উপেক্ষা করেন, কিন্তু ভবিষ্যতে এটি বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ বা স্প্রে ব্যবহার করা হলেও, স্থায়ী ও প্রাকৃতিক সমাধানের জন্য যোগাসন (Yoga Asanas) হতে পারে সর্বোত্তম উপায়।
যোগগুরু বাবা রামদেব দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে যোগাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন করে আসছেন। তাঁর লেখা ‘যোগ দর্শন এবং অভ্যাস’ বইতেও বহু রোগের নিরাময়ে যোগের কার্যকারিতা উল্লেখ রয়েছে। বাবা রামদেবের মতে, এই পাঁচটি যোগাসন নিয়মিত করলে কোমরের ব্যথা দ্রুত কমে যায় এবং মেরুদণ্ড মজবুত হয়।
১. উষ্ট্রাসন (Ustrasana):
উপকারিতা: এটি কোমর ব্যথার উপশমে খুবই উপকারী। এই আসনটি করার সময় শরীর একদিকে বেঁকে যায়, ফলে কোমরে টান পড়ে। এতে কোমর শক্তিশালী ও নমনীয় হয়।
পদ্ধতি: উষ্ট্ৰাসন করার সময় হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। তাই আরামদায়কভাবে অভ্যাসের জন্য হাঁটুর নিচে একটি নরম বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।
২. ভুজঙ্গাসন (Bhujangasana):
উপকারিতা: এটি কোমরকে মজবুত করার পাশাপাশি পেটের মেদ কমাতেও সহায়ক। এই আসনটি মেরুদণ্ডের নিচের অংশকে স্ট্রেচ করে এবং পিঠের ব্যথা উপশম করে। যাঁদের পেট বেরিয়ে এসেছে, তাঁরাও এই আসন করতে পারেন।
পদ্ধতি: প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাতের ওপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে ঘাড় ও বুক ওপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন।
৩. শলভাসন (Shalabhasana):
উপকারিতা: শলভাসন মেরুদণ্ডের নিচের হাড়কে (Monkey Bone) শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটি পেটের চর্বি কমাতেও কার্যকর।
পদ্ধতি: এই যোগাসনে একটি পা ওপরের দিকে তুলে পিছনের দিকে প্রসারিত করা হয়। নিয়মিত এই আসনটি করলে পেট এবং কোমর উভয়ই সুস্থ থাকে।
৪. ধনুরাসন (Dhanurasana):
উপকারিতা: পিঠের ব্যথা দূর করার জন্য প্রতিদিন ধনুরাসন অভ্যাস করা যেতে পারে। এটি শরীরের নমনীয়তা বাড়ায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
পদ্ধতি: প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর দু’হাত দিয়ে দুটি পা পেছন থেকে ধরে ধনুকের মতো আকৃতি তৈরি করতে হয়। শুরুতে এটি কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু নিয়মিত অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।
৫. মর্কটাসন (Markatasana):
উপকারিতা: কোমর ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পেতে মর্কটাসনকে সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে করা হয়। এটি মেরুদণ্ডের নিচের অংশে টান সৃষ্টি করে এবং ব্যথা দ্রুত উপশম করে।
পদ্ধতি: এই আসনে হাঁটু এবং পা কাছাকাছি ভাঁজ করে কাঁধ ও ঘাড়কে প্রথমে ডানদিকে এবং তারপর বাম দিকে মোচড় দিতে হয়। এই আসনটি একাধিক ভিন্ন উপায়ে করা যেতে পারে।