ওজন কমাতে বেছে নিন সঠিক চাল, দাবি গবেষকদের

অতিরিক্ত ওজন কমাতে অনেকেই খাদ্য তালিকা থেকে ভাত বাদ দিয়ে রুটি বা অন্য খাবার গ্রহণ করেন। তবে ভাত বাঙালির খাদ্য ও পুষ্টির অন্যতম ভিত্তি হওয়ায় এর বিকল্প সহজে মন ভরাতে চায় না। কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভাতের প্রকারভেদ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন – লাল চাল ভালো নাকি সাদা চাল?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক পরিমাণে ও সঠিক চাল নির্বাচন করে ভাত খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এক্ষেত্রে সাদা চালের তুলনায় লাল চাল অনেক বেশি উপকারী।

লাল চাল কেন ভালো?

লাল চালের প্রধান সুবিধা হল এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ (ফাইবার) থাকে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বহুবিধ উপকারী। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, হজমে সাহায্য করতে এবং ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলিকে অন্ত্রের কোষের সংস্পর্শে দীর্ঘক্ষণ থাকতে বাধা দেয়।

এছাড়াও, লাল চাল সেলেনিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। এই খনিজ উপাদানটি অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই চালে ভিটামিন বি১, বি৩, বি৬ এবং ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাসের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ সাদা চালের চেয়ে বেশি পরিমাণে বিদ্যমান। চালকে সাদা করার প্রক্রিয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যায় এবং আঁশের পরিমাণও কমে যায়। এই সমস্ত দিক বিবেচনা করলে নিঃসন্দেহে সাদা চালের চেয়ে লাল চাল অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

লাল চালের লাল রঙের রহস্য:

লাল চালে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে থাকার কারণেই এর রং লালচে হয়। যারা অতিরিক্ত ওজন কমাতে আগ্রহী, তাদের জন্য সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে প্লেট ভরে তিন বেলা লাল চালের ভাত খেলে চলবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাদা ভাত যে পরিমাণে খাওয়া উচিত, সেই পরিমাণেই লাল চালের ভাত গ্রহণ করা যেতে পারে।

তবে লাল চালে সামান্য পরিমাণে ফাইটিক অ্যাসিড নামক একটি উপাদান থাকে, যা আয়রন ও ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দিতে পারে। এই কারণে লাল চালের ভাত খাওয়ার সময় বেশি আয়রন ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।

পরিশেষে বলা যায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভাতের বিকল্প না খুঁজে বরং সাদা চালের পরিবর্তে পরিমিত পরিমাণে লাল চাল গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ। এর পুষ্টিগুণ যেমন বেশি, তেমনই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হতে পারে। তবে যেকোনো পরিবর্তনের আগে অবশ্যই পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy