ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল রোগ। ভারতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে, বিশেষ করে গত দশকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি পারিবারিক ইতিহাসের কারণে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনও এই রোগের বড় কারণ। আপনি কী খাচ্ছেন এবং কীভাবে জীবনযাপন করছেন, তার ওপর আপনার স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে।
যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের জন্য ছোটখাটো রোগও মারাত্মক হতে পারে। ওষুধ ছাড়াও কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে, কিছু নির্দিষ্ট বীজ ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক কিছু বীজ
চিয়া বীজ
চিয়া বীজ শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে চিয়া বীজ ভেজানো জল পান করলে এটি বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হয়। কম গ্লাইসেমিক সূচকের কারণে, এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
মেথি বীজ
মেথি বীজে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। খাবারে মেথি বীজ ব্যবহার করলে শরীরে গ্লুকোজ শোষণের প্রক্রিয়া ধীর হয়, ফলে গ্লুকোজ সহনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
শণের বীজ
শণের বীজ ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে। শরীরে ইনসুলিন কার্যকরভাবে কাজ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। এছাড়া, এতে উপস্থিত লিগনান নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কুমড়োর বীজ ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক, যা ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধু ওষুধের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। চিয়া, মেথি, শণ এবং কুমড়োর বীজ খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। তবে, যেকোনো খাদ্য পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।