ব্যস্ত জীবনে ফ্রিজ একটি অপরিহার্য গৃহস্থালীর সরঞ্জাম। বিশেষ করে এই তীব্র গরমে ফল, সবজি এবং রান্না করা খাবার তরতাজা রাখতে ফ্রিজের বিকল্প নেই। তবে এসির মতোই ফ্রিজও বিদ্যুৎ বিলের একটি বড় কারণ হতে পারে। যেহেতু ফ্রিজ দিনে ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকে, তাই মাসের শেষে মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল আসা অস্বাভাবিক নয়। এই বিল দেখে স্বাভাবিকভাবেই কপালে ভাঁজ পড়ে। তবে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে বলে ফ্রিজ ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব না হলেও, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে সারা দিন ফ্রিজ চালিয়েও বিদ্যুৎ বিল অনেক কম আসতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই কার্যকরী উপায়গুলো:
১. ফ্রিজ কখনো খালি রাখবেন না:
অনেকেরই ধারণা থাকে যে, ফ্রিজে বেশি জিনিস রাখলে বুঝি বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ফ্রিজের ভেতরে ফাঁকা জায়গা থাকলে ঠান্ডা তাপমাত্রা ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে ফ্রিজকে ঠান্ডা রাখতে কম্প্রেসারকে বেশি কাজ করতে হয় এবং বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে। তাই ফ্রিজ আংশিক খালি অবস্থায় না চালিয়ে পর্যাপ্ত খাবার রাখুন। তবে খেয়াল রাখবেন, খাবারগুলো এমনভাবে সাজান যাতে ভেতরে বাতাস চলাচল করতে পারে।
২. প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিজের তাপমাত্রা নির্ধারণ করুন:
আবহাওয়া এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিকভাবে নির্ধারণ করুন। শীতকালে যে তাপমাত্রা প্রয়োজন, গ্রীষ্মকালে তার থেকে কিছুটা বেশি তাপমাত্রা রাখলেও খাবার ভালো থাকবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা করার প্রয়োজন না থাকলে ফ্রিজের তাপমাত্রা সামান্য বাড়িয়ে রাখুন। এছাড়াও, মাঝে মাঝে যখন দেখেন ফ্রিজ যথেষ্ট ঠান্ডা হয়েছে, তখন কিছুক্ষণ বন্ধ করে রাখতে পারেন।
৩. ফ্রিজের দরজা খুলে রাখবেন না:
প্রয়োজনীয় জিনিস বের করার পর অনেকেই অসাবধানতাবশত ফ্রিজের দরজা খোলা রেখে দেন। এটি একটি ভুল অভ্যাস। ফ্রিজের দরজা খোলা থাকলে ভেতরের ঠান্ডা বাতাস দ্রুত বেরিয়ে যায়। ফলে ফ্রিজকে পুনরায় ঠান্ডা করতে কম্প্রেসারের উপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তাই জিনিস বের করার সঙ্গে সঙ্গেই দরজা ভালোভাবে বন্ধ করুন।
৪. গরম খাবার ফ্রিজে রাখবেন না:
তাড়াহুড়োয় অনেকেই গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে ঢুকিয়ে দেন। এটি করা উচিত নয়। গরম খাবার ফ্রিজে ঢোকানোর আগে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে নিন। গরম খাবার ঠান্ডা করতে ফ্রিজের কম্প্রেসারকে অতিরিক্ত শক্তি খরচ করতে হয়, যার ফলে বিদ্যুৎ বিল বাড়ে।
৫. দরকার না পড়লে ফ্রিজ বন্ধ করে রাখুন:
অনেকের বাড়িতে অপ্রয়োজনেও ফ্রিজ চালু থাকে। যদি ফ্রিজে রাখার মতো কোনো খাবার বা শাকসবজি না থাকে, অথবা দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়ির বাইরে থাকেন, তাহলে ফ্রিজ বন্ধ করে রাখুন। এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে এবং আপনার বিদ্যুৎ বিল কম আসবে।
এই সহজ নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি গরমেও আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারবেন এবং একই সাথে আপনার বিদ্যুৎ বিলও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। একটু সচেতন হলেই বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব।