খাওয়ার পরপরই দাঁত মাজার অভ্যাস অনেকেরই। তারা মনে করেন, প্রতিবার খাওয়ার পরে দাঁত মাজলে দাঁত আরও পরিষ্কার ও সুরক্ষিত থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত কোনো অভ্যাসই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দাঁত মাজলে দাঁতের উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চা, কফি এবং বিভিন্ন কোমল পানীয় পান করার সঙ্গে সঙ্গেই দাঁত ব্রাশ করা উচিত নয়। এই ধরনের পানীয়তে থাকা অ্যাসিড টুথপেস্টের রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে বিক্রিয়া করে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি করে। শুধু তাই নয়, অ্যাসিড দাঁতের এনামেলের ভেতরে স্থায়ীভাবে বসে যাওয়ারও সুযোগ পায়। তাই যদি দাঁত মাজতেই হয়, তবে এই জাতীয় পানীয় পানের অন্তত ৩০ মিনিট পর দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
অনেকেরই ধারণা, দিনের প্রতিটি খাবার গ্রহণের পরই দাঁত পরিষ্কার করা অত্যাবশ্যক। তবে বাস্তবতা হলো, সকাল এবং রাতে – এই দুইবার দাঁত মাজলেই যথেষ্ট। খাওয়ার পরপরই দাঁত মাজা জরুরি কি না, তা মূলত নির্ভর করে আপনি কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন তার উপর।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত দাঁত মাজার ফলে দাঁতের সবচেয়ে বাইরের স্তর, অর্থাৎ এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলস্বরূপ ‘টুথ সেনসিটিভিটি’ বা দাঁত শিরশির করার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বর্তমানে অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন।
তাহলে প্রশ্ন হলো, দাঁত মাজার সঠিক সময় কখন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে – এই দুই সময় দাঁত মাজা সর্বোত্তম। তবে খাবার খাওয়া এবং দাঁত মাজার মধ্যে অন্তত ৩০ মিনিটের বিরতি রাখা জরুরি। এই সময়টুকুতে খাবারের অ্যাসিডের প্রভাব অনেকটাই কমে আসে।
এছাড়াও, বেশি জোরে এবং অতিরিক্ত সময় ধরে দাঁত মাজার কারণে দাঁতের এনামেল এবং মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। একইসঙ্গে, আপনার টুথব্রাশের ব্রিসেলস যদি খুব শক্ত হয়, তাহলে দাঁত ও মাড়ি কেটে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।
অতএব, দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অতিরিক্ত দাঁত মাজার অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং সঠিক সময়ে, সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত মাজুন। মনে রাখবেন, পরিমিত এবং সচেতনতাই আপনার দাঁতকে দীর্ঘকাল সুস্থ রাখতে পারে।