ওজন কমানোর জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এর পাশাপাশি শরীরচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ওজন কমাতে খাবারের ভূমিকা ৭০ শতাংশ এবং শরীরচর্চার ভূমিকা ৩০ শতাংশ। তাই খাদ্যতালিকার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
উচ্চ প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার ওজন কমাতে বিশেষভাবে সহায়ক। ফাইবারজাতীয় খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে, যা খাবার গ্রহণের পর আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভব করাতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
ওজন কমানোর চেষ্টায় অনেকেই খাদ্যতালিকা থেকে বিভিন্ন খাবার, ফল এমনকি সবজিও বাদ দিয়ে দেন। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে যা ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৬টি খাবার সম্পর্কে:
১. কুমড়া:
স্বাদে সামান্য মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে কুমড়া খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন। তবে এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এবং ক্যালোরির পরিমাণও অনেক কম। এক কাপ কুমড়াতে প্রায় ৮০ ক্যালোরি থাকে। এটি ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ একটি সবজি। কুমড়াতে বিটা-ক্যারোটিন ও ক্যারোটিনয়েড (যা শরীর ভিটামিন এ তৈরি করতে ব্যবহার করে এবং কুমড়াকে তার উজ্জ্বল কমলা রঙ দেয়) থাকে। তাই ওজন কমাতে খাদ্যতালিকায় নিয়মিত কুমড়া রাখতে পারেন।
২. আখরোট:
আখরোট মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটি ভালো উৎস। এছাড়াও এক আউন্স আখরোটে প্রায় ৪ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম ফাইবার থাকে এবং ক্যালোরির সংখ্যা ২০০-এর কম। হালকা খিদে মেটাতে আখরোটের জুড়ি মেলা ভার। এমনকি চিনাবাদামের চেয়ে আখরোটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই ওজন কমানোর ডায়েটে আখরোট একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন হতে পারে।
৩. টক দই:
টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা হজম ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। এটি হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজন কমাতেও দারুণ কার্যকরী। খনিজ ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ টক দই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। ১০০ গ্রাম টক দইয়ে মাত্র ১.৭ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা ওজন কমানোর জন্য ভালো।
৪. মিষ্টি আলু:
মিষ্টি আলুও দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এমনকি মিষ্টি আলুতে জলের পরিমাণও অনেক বেশি থাকে, যা এটি হজম করতে সহজ করে তোলে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।
৫. ছোলা:
ছোলার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার থাকে, যা ওজন কমাতে সহায়ক। ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং প্রোটিন ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমানোর ডায়েটে সামান্য পরিমাণে ছোলা রাখতে পারেন।
৬. মসুর ডাল:
উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস হলো মসুর ডাল। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে। মসুর ডাল উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে একটি, যা ওজন কমানোর জন্য দারুণ এক উৎস। আধা কাপ মসুর ডালে প্রায় ১২০ ক্যালোরি এবং ৮ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমানোর জন্য এই পুষ্টিকর খাবারগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করুন।