অনেক শিশুই পড়া মনে রাখতে পারে না। কিছুক্ষণ আগেই যা পড়েছে, কিছু সময় পরেই তা ভুলে যাচ্ছে। এটা নিয়ে বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। তবে সকলের মেধা একরকম হয় না—কেউ খুব সহজে মনে রাখতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে একটু সময় লাগে।
যদি আপনার সন্তানও এই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকে, তাহলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কিছু সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি অবলম্বন করলে তার স্মরণশক্তি ধীরে ধীরে উন্নত হতে পারে। দেখে নিন এমনই চারটি কার্যকরী পরামর্শ।
✅ ১. বাস্তব উদাহরণ দিয়ে পড়ান
শিশুদের পড়ানোর সময় বইয়ের ভাষা নয়, বাস্তব উদাহরণ ব্যবহার করুন। ধরুন, যদি আপনি “জল বাষ্প হয়ে মেঘ হয়” এই ধারণা বোঝাতে চান, তাহলে শিশুকে রান্নাঘরের ফুটন্ত কেটলির ভাপ দেখিয়ে বলুন, “দেখো, ঠিক এইভাবেই জল থেকে বাষ্প হয়।”
বাস্তব উদাহরণ শিশুর মনে বিষয়বস্তু দীর্ঘদিন গেঁথে দেয়।
✅ ২. শেখার পদ্ধতি হোক মজাদার ও আকর্ষণীয়
শুধু বই পড়ালেই হবে না—চিত্র, গল্প, চার্ট, গানের মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করুন। এতে শিশু একঘেয়েমি বোধ করে না এবং পড়াশোনা তার কাছে একটা খেলা হয়ে দাঁড়ায়। আপনি চাইলে কালারফুল ফ্ল্যাশকার্ড, বোর্ড গেম বা মোবাইলের উপযুক্ত অ্যাপে পড়াশোনার সহায়তা নিতে পারেন।
✅ ৩. বুঝে পড়া, মুখস্থ নয়
বাচ্চাদের বারবার মুখস্থ করাতে গেলে তারা এক সময় বিরক্ত হয়ে পড়ে। বরং বিষয়টি ধাপে ধাপে বোঝান, যাতে তারা মনে রাখতে পারে। যখন তারা বুঝবে, তখন মনে রাখাও অনেক সহজ হয়ে যাবে। বুঝে নেওয়ার পর নিয়মিত রিভিশন করানোই সবচেয়ে কার্যকর।
✅ ৪. বিশ্রাম জরুরি – পড়া আরাম করে ভাগ করে দিন
শিশুদের মন একটানা অনেকক্ষণ ধরে মনোযোগী থাকে না। তাই ৩০-৪০ মিনিট অন্তর বিরতি দিন। শিশুকে হেঁটে আসতে বলুন, জল খেতে দিন, কিছু হালকা খেলা খেলতে দিন। এতে মন সতেজ থাকবে এবং পড়ার প্রতি আগ্রহও বজায় থাকবে।
একটানা চাপ দিলে শিশুর মনে পড়া গেঁথে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
📌 উপসংহার
শিশুর স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে কোনও জাদুমন্ত্র নেই, কিন্তু উপযুক্ত পদ্ধতি, ধৈর্য এবং পজিটিভ পরিবেশ অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই আলাদা। তার শেখার ধরন, সময় এবং আগ্রহ বুঝে তাকে সাহায্য করুন।
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পড়াশোনার চাপে নয়, ভালোবাসা ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে শিশুকে শেখার পথে এগিয়ে নিন। তাহলেই সে নিজেই তার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।