ভারতীয় ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর বিদেশি টি-২০ লিগগুলিতে খেলার কথা ঘোষণা করেছিলেন তারকা স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আইএলটি-২০ (ILT20) লিগের নিলামে চরম ধাক্কা খেলেন তিনি। বুধবার নিলামে অশ্বিনকে কেনার জন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ দেখায়নি, ফলে তিনি অবিক্রিতই থেকে যান।
একমাত্র প্লেয়ার হিসেবে অশ্বিনের বেস প্রাইজ ছিল ছয় অঙ্কের, অর্থাৎ ১২০,০০০ মার্কিন ডলার। এত বড় বেস প্রাইজ নিয়েও কোনো দল তাঁকে না নেওয়ায় ক্রিকেট মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
শেষ মুহূর্তে কি নাম প্রত্যাহার? সাইমন ডুলের দাবি
অশ্বিন কেন অবিক্রিত থাকলেন, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। লাইভ নিলাম চলাকালীন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার সাইমন ডুল এক বিস্ফোরক দাবি করে বসেন।
তিনি বলেন, “আমরা শুনছি ও নিলাম থেকে শেষমুহূর্তে নাম তুলে নিয়েছে। যা আমাদের কাছে বড় চমক।”
ডুলের ধারণা, দলগুলির পার্সে কত টাকা অবশিষ্ট আছে, সেই পরিস্থিতি হয়তো অশ্বিন বুঝতে পারেননি। তাঁর কথায়, “তিন থেকে চার দলের পটে ৪০০,০০০ মার্কিন ডলার বাকি ছিল। আমার মনে হয় না কেউ টাকা ফেরত নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সবার লক্ষ্য ছিল প্লেয়ার কেনা। ও যদি নিজেকে শেষ মিনিটে সরিয়ে নিয়ে থাকে, তাহলে হয়তো নিলামের পরিস্থিতি বোঝেনি। আমার মনে হয় অনেকেই ওকে নেওয়ার চেষ্টা করত।”
বিগ ব্যাশ ও সূচি-সংঘাতের সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অবিক্রিত থাকার নেপথ্যে অন্য একটি কারণ থাকতে পারে— সূচি-সংঘাত (Scheduling Conflict)।
আইএলটি-২০ লিগ চলবে ২ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। অন্যদিকে, অশ্বিন অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ (BBL) লিগে সিডনি থান্ডারের হয়ে খেলবেন, যা চলবে ১৪ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। একই সময়ে দুটি লিগে খেলা প্রায় অসম্ভব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যাতায়াত করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই সূচি-সংঘাতের কারণেই সম্ভবত অশ্বিন শেষ মুহূর্তে নিলাম থেকে নাম তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।
আন্তর্জাতিক ও আইপিএল থেকে অবসর
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আগেই বিদায় জানিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। গত বছরের ডিসেম্বরে বর্ডার গাভাসকার ট্রফি চলাকালীন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। একদিনের এবং টি-২০ দলে সুযোগ না পাওয়ার কারণে তিনি আইপিএল থেকেও অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গণেশ চতুর্থীর দিন অবসর ঘোষণা করে অশ্বিন লিখেছিলেন, “আইপিএলের ক্রিকেটার হিসাবে আমার যাত্রা এখানেই শেষ হচ্ছে। বিভিন্ন লিগে ক্রিকেটের অভিযাত্রী হিসাবে আমার অভিযান শুরু হচ্ছে।” আপাতত বিগ ব্যাশে তাঁর খেলা নিশ্চিত হলেও, আইএলটি-২০ নিলামে অবিক্রিত থাকা তাঁর এই নতুন যাত্রায় কিছুটা হলেও ছন্দপতন ঘটাল। তবে ওয়াইল্ড কার্ড হিসেবে তাঁর খেলার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।
আপনার কি মনে হয় বিগ ব্যাশ খেলার কারণেই অশ্বিন আইএলটি-২০ নিলামে অবিক্রিত থাকার ঝুঁকি নিয়েছিলেন, নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে?