ডুরান্ড কাপে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের অংশগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার মেঘ অবশেষে কাটতে চলেছে। অবশেষে সবুজ-মেরুন শিবিরের কাছ থেকে সবুজ সংকেত মেলার পরেই ডুরান্ড কমিটি তাদের প্রাথমিক সূচি প্রকাশ করেছে। তবে এই অংশগ্রহণের পেছনে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট চারটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রেখেছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে।
শর্ত ১: ফেডারেশন-এফএসডিএল চুক্তির ভবিষ্যৎ
ডুরান্ড কমিটি মোহনবাগানকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য আগেই অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল। এর উত্তরে মোহনবাগানও পাল্টা চিঠি দিয়ে তাদের শর্তগুলো সামনে রেখেছে। তাদের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো, সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সংবিধান সংশোধন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ওপর তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ভরশীল। কারণ, যদি ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (FSDL) এর সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তি বাতিল হয়, তবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে, ফুটবলারদের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি নিয়ে ক্লাবকে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট।
শর্ত ২: অনুশীলন মাঠের সংকট ও যুবভারতীর দাবি
অনুশীলনের মাঠ নিয়েও মোহনবাগান কর্তৃপক্ষের বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। নিজেদের ক্লাবের মাঠ বহু টাকা খরচ করে উন্নত করা হলেও, বছরের অর্ধেক সময় তা সেনাবাহিনীর দখলে থাকায় মূল ফুটবল দল সেখানে অনুশীলন করতে পারে না। এবারেও ডুরান্ড শুরুর এক মাস আগেই মাঠটি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে, যা শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবটিকে সমস্যায় ফেলেছে। নিউটাউনে সেন্টার অফ এক্সিলেন্সের মাঠে অ্যাস্ট্রোটার্ফ থাকায় ফুটবলারদের চোট পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ডুরান্ড কমিটির কাছে তারা যুবভারতীর অনুশীলন মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে।
শর্ত ৩: ম্যাচের টিকিটের নিশ্চয়তা
গত কয়েক বছর ধরে ম্যাচের টিকিট বিতরণ নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এবার ম্যানেজমেন্ট তাদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত টিকিট পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা চাইছে। বিশেষ করে বড় ম্যাচ বা নকআউট পর্বের ম্যাচগুলিতে ক্লাবকে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। সদস্যদের পাশাপাশি বহু সমর্থক টিকিট না পেয়ে হতাশ হন, যা কর্তারা আর চান না। এই বিষয়টি সুরাহার দাবি জানিয়েছে মোহনবাগান।
শর্ত ৪: গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ জানার আগ্রহ
পাশাপাশি, মোহনবাগান তাদের গ্রুপে কোন কোন দল থাকছে, সে বিষয়েও স্পষ্ট ধারণা চাইছে ডুরান্ড কমিটির কাছে। বিশেষ করে গ্রুপ পর্যায়েই কলকাতা ডার্বি হবে, নাকি পরবর্তী রাউন্ডে, সেই ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা চাওয়া হয়েছে। কারণ সেভাবেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট তাদের দল সাজাবে। ডার্বি যেহেতু মর্যাদার লড়াই, তাই সেখানে মূল দলের ফুটবলারদেরও নামিয়ে দিতে পারে তারা।
এই চারটি শর্ত পূরণ হলেই মোহনবাগান ডুরান্ড কাপে পূর্ণশক্তিতে খেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। আয়োজকরা এখন মোহনবাগানের শর্তগুলো বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেই আশা করা হচ্ছে, যাতে টুর্নামেন্টের আকর্ষণ অক্ষুণ্ণ থাকে।