ফের IPL কেলেঙ্কারি! হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে তোলপাড়, করা হলেন গ্রেফতার?

হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (HCA)-এ তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ জগন মোহন রাও-সহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বুধবার তেলেঙ্গানা সিআইডি হেফাজতে নিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, নির্বাচনে জাল নথি ব্যবহার থেকে শুরু করে অ্যাসোসিয়েশনের কোটি টাকার তহবিল ‘উধাও’ – সব কিছুর সঙ্গেই এই নেতাদের নাম জড়িয়েছে। বাদ যায়নি আইপিএল-এর টিকিট বিতর্কও।

কারা গ্রেপ্তার হলেন?
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া অন্য চারজন হলেন – কোষাধ্যক্ষ সি শ্রীনিবাস রাও, সিইও সুনীল কান্টে, সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দর যাদব এবং তাঁর স্ত্রী জি কবিতা।

ভুয়া নথি জমা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অর্থ নয়ছয়
এই মামলার সূত্রপাত গত ৯ জুন, যখন তেলেঙ্গানা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ধর্ম গুরুবা রেড্ডি অভিযোগ করেন যে, জগন মোহন রাও নির্বাচনে ভুয়া নথি জমা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর নেতৃত্বাধীন এইচসিএ-এর একাধিক শীর্ষ সদস্য প্রায় ২.৩ কোটি টাকা তহবিল থেকে নয়ছয় করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, এবং অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পত্তি আত্মসাৎ।

আইপিএল টিকিটের চাপ এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হুঁশিয়ারি
হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে আরও এক গুরুতর অভিযোগ এনেছে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH)। তাদের অভিযোগ, অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ‘হুমকি’ দিয়ে বেশি কমপ্লিমেন্টারি পাস দাবি করা হয়েছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজির বক্তব্য, প্রতি ম্যাচে ৩,৯০০টি পাস দেওয়ার চুক্তি থাকলেও, অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আরও ২০টি পাস চাইছিলেন। বিষয়টি এতটাই বিতর্কিত হয়ে ওঠে যে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ স্পষ্ট জানায়, পরিস্থিতি না বদলালে তারা হায়দরাবাদ ছেড়ে অন্য রাজ্যে হোম ম্যাচ আয়োজন করতে বাধ্য হবে। বিষয়টি নিয়ে তারা সরাসরি বিসিসিআই এবং আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছেও অভিযোগ জানায়। এই অভিযোগ সামনে আসতেই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেভন্ত রেড্ডি হস্তক্ষেপ করেন এবং তদন্তের নির্দেশ দেন।

আজহারউদ্দিনের কড়া বার্তা: “ভেঙে দিন এইচসিএ”
এইচসিএ-এর প্রাক্তন সভাপতি এবং প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন এই বিতর্কের মাঝে মুখ খুলে কড়া মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এই অ্যাসোসিয়েশনের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। পুরো ব্যবস্থাটাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যত দ্রুত সম্ভব এইচসিএ-কে ভেঙে দেওয়া উচিত।”

অন্যদিকে, এইচসিএ প্রেসিডেন্ট জগন মোহন রাও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “এগুলো রাজনৈতিক চক্রান্ত। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই অভিযোগ।”

এই গ্রেপ্তারির ঘটনা হায়দরাবাদের ক্রিকেট মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy