চেন্নাই: পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে মহম্মদ রিজওয়ানকে (Mohammad Rizwan) সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার রশিদ লতিফ (Rashid Latif)। রিজওয়ান প্যালেস্টাইনের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং ইসলামিক সংস্কৃতি প্রচার করায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন লতিফ।
রিজওয়ানের জায়গায় নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন শাহিন আফ্রিদি (Shaheen Afridi)। আগামী মাসে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজই হবে আফ্রিদির প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।
লতিফের বিস্ফোরক মন্তব্য: ‘অইসলামিক’ রাজনীতির অভিযোগ
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) আনুষ্ঠানিকভাবে আফ্রিদিকে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নিশ্চিত করার আগেই লতিফ এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে রিজওয়ানের নাম উল্লেখ করা হয়নি, কিংবা সিদ্ধান্তের কারণও ব্যাখ্যা করা হয়নি।
লতিফ বলেন, “একটি গুজব ছড়িয়েছে যে রিজওয়ান আর অধিনায়ক থাকছেন না। শুধুমাত্র প্যালেস্টাইনের পতাকা তুলে ধরেছিল বলে কি আপনারা তাকে অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেবেন? এমন একটি মানসিকতা তৈরি হয়েছে যে একটি ইসলামিক দেশে একজন অ-ইসলামিক অধিনায়ক থাকবে।”
তিনি সরাসরি কোচ মাইক হেসন (Mike Hesson)-এর দিকে আঙুল তুলে বলেন, “এটা মাইক হেসনের কাজ। ড্রেসিংরুমে এই সংস্কৃতি তাঁর পছন্দ নয়। তিনি এই সংস্কৃতিকে শেষ করতে চান।” লতিফ আরও যোগ করেন যে ইনজামাম-উল-হক, সাঈদ আনোয়ার বা সাকলাইন মুশতাকের সময়ে এই সংস্কৃতি নিয়ে কারও কোনো সমস্যা ছিল না।
রিজওয়ানের নেতৃত্ব এবং বোর্ডের সিদ্ধান্ত
বাবার আজম সব ফরম্যাট থেকে সরে যাওয়ার পর রিজওয়ান ওয়ানডে দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ২০টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেন, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাইলেটারাল সিরিজে জয় ছিল। সামগ্রিকভাবে, তাঁর নেতৃত্বে দল ৯টি জয় এবং ১১টি পরাজয় দেখেছে।
রিজওয়ানকে সরানোর এই সিদ্ধান্তটি এসেছে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পরে, যেখানে তারা প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিয়েছিল।
অন্যদিকে, শাহিন আফ্রিদির জন্য এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম নেতৃত্ব নয়। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরে বাবর আজম পদত্যাগ করার সময় বাঁ-হাতি এই পেসারকে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল। তবে, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-৪ ব্যবধানে হারের পর আফ্রিদিকে সরিয়ে আবারও বাবরকে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক করা হয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের সীমিত ওভারের প্রধান কোচ মাইক হেসন, হাই পারফরম্যান্স ডিরেক্টর আকিভ জাভেদ এবং নির্বাচন কমিটির সদস্যদের বৈঠকের পরই আফ্রিদিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।