ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা এবং তাঁর তিন আন্তর্জাতিক সহযাত্রীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের ঐতিহাসিক যাত্রা আবারও স্থগিত করা হয়েছে। স্পেসএক্স জানিয়েছে, রকেটের একটি অংশে তরল অক্সিজেন (LOx) লিক ধরা পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আকস্মিক জটিলতা মহাকাশ উৎসাহী এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে কিছুটা হতাশা তৈরি করেছে।
প্রযুক্তিগত ত্রুটি: LOx লিকের কারণে উৎক্ষেপণ বাতিল
স্পেসএক্স কোম্পানি নিশ্চিত করেছে যে, ফ্যালকন ৯ রকেট পরিদর্শনের সময় একটি তরল অক্সিজেন লিক ধরা পড়েছে। এই প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে উৎক্ষেপণ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে তারা। প্রাথমিকভাবে, অ্যাক্সিওম-৪ মিশনটি আজ, বুধবার (১২ জুন, ২০২৫) বিকেল ৫:৩০ মিনিটে (IST) উৎক্ষেপণের কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা করা হবে না বলে স্পেসএক্স জানিয়েছে।
“অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের জন্য আগামিকালের ফ্যালকন ৯ রকেটের উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হচ্ছে যাতে স্পেসএক্স টিম LOx লিক ঠিক করতে পারে,” এক্স (পূর্বে টুইটার) এ পোস্ট করে স্পেসএক্স এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। কোম্পানি আরও জানিয়েছে যে, মেরামতের কাজ সম্পন্ন হওয়া এবং উৎক্ষেপণের জন্য পরিসরের প্রাপ্যতার উপর ভিত্তি করে একটি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
ভারত, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির স্বপ্নযাত্রা:
শুভাংশু শুক্লাকে বহনকারী এই অ্যাক্সিওম-৪ মিশনে ভারত ছাড়াও পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির মহাকাশচারীরা রয়েছেন। এটি ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল, কারণ এটি ভারতীয় মহাকাশচারীর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথম ব্যক্তিগত মিশন হতে পারত। এই স্থগিতাদেশ স্বাভাবিকভাবেই এই দেশগুলোর মহাকাশ কর্মসূচিতে একটি সাময়িক ধাক্কা।
এর আগে, স্পেসএক্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে উৎক্ষেপণের জন্য আবহাওয়া ৮৫ শতাংশ অনুকূল ছিল। তবে, আরোহণ করিডোরে তীব্র বাতাস পর্যবেক্ষণে ছিল, যা এক অন্য চিন্তার কারণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া নয়, রকেটের অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তিগত ত্রুটিই এই স্থগিতাদেশের কারণ হলো।
বর্তমানে স্পেসএক্সের কারিগরি দল LOx লিক সমস্যা সমাধানে নিবেদিতভাবে কাজ করছে। মেরামতের কাজ শেষ হলে এবং রকেট পুনরায় নিরাপদ প্রমাণিত হলে তবেই এই উচ্চাভিলাষী মিশনের জন্য একটি নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। এই স্থগিতাদেশ মহাকাশ গবেষণার অনিশ্চয়তা এবং প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলোর কথা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল। এখন অপেক্ষা, কবে এই মহাকাশচারীরা তাঁদের স্বপ্নের কক্ষপথে পাড়ি দেবেন।