৪০ বছর ধরে বকুলতলায় মুড়ি-ঘুগনি! বিশ্বভারতী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভরসা, কে এই শান্তিনিকেতনের ‘সোনা দা’?

কারোর কাছে তিনি ‘সোনা দা’, আবার কারোর কাছে ‘সোনাকাকু’ বা ‘দাদু’। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে রবীন্দ্রনাথের বোলপুর শ্রীনিকেতনের বকুলতলায় দিন কাটাচ্ছেন সনাতন ধারা, যাকে সবাই সোনাদা নামে চেনেন। তাঁর রুজিরুটি বলতে ঠেলাগাড়ির মধ্যে থাকা মুড়ি-ঘুগনির দোকান। আর মাথার ওপরের ছাদ বলতে এক চিলতে খোলা আকাশ।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভরসা:

প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা সোনাদার এই মুড়ি-ঘুগনির দোকান আজও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী এবং প্রাক্তনীদের কাছে জলখাবারের একমাত্র ভরসা। রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় গড়া শিক্ষাছত্র এবং পাঠভবনের ঠিক লাগোয়া এই স্থানটিকে ঘিরেই সোনাদার ঘুগনির দোকান গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে।

এখানে গেলে আপনি পাবেন—

  • খাবার: ঝাল মুড়ি, আলুকাটা, ঘুগনি।

  • মরশুমি মাখা ফল: পেয়ারা, আমড়া, কামরাঙ্গা ইত্যাদি।

সোনাদার পরিচয়:

সোনাদা বা সনাতন ধারা আদতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোলপুর শ্রীনিকেতন লাগোয়া লোহাগর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাড়িতে সোনার দোকান ছিল। পরিবারের শেষ সন্তান হওয়ায় দাদু শখ করে তাঁর নাম রেখেছিলেন সনাতন ধারা। বীরভূমের ঐতিহ্যের বাউল শিল্পীদের মতো সোনাদা আপন মনে গান গেয়ে যান। তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত থেকে শুরু করে বাউল গান শুনতে শুনতে আপনি সকালের টিফিন সেরে নিতে পারবেন।

জীবনের দর্শন:

সোনাদা তাঁর সহজ-সরল জীবনবোধ নিয়ে বলেন, “এমন ভাবে দিন কেটে গেলে যাকনা মন্দ কোথায়? মৃত্যুর পরে এখানেই থাকবো সমাধি হয়ে।”

আপনি যদি বোলপুর শান্তিনিকেতন বেড়াতে আসেন, তবে অন্তত একবার এই ঐতিহ্যবাহী সোনাদার ঠেলাগাড়ির দোকান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy