বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের দামামা বাজার আগেই এক ঝোড়ো ইনিংস শুরু করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ১৭ বছর পর বিদেশের মাটি ছেড়ে বৃহস্পতিবার নিজের দেশে পা রেখেই ঢাকায় এক বিশাল জনসভা করেন তিনি। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেককে ঘিরে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তা ২০২৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে শাসক ও বিরোধী শিবিরের জন্য বড় সঙ্কেত। সভায় তারেক রহমান সরাসরি বলেন, তাঁর কাছে দেশের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি জনগণের পূর্ণ সহযোগিতা চান।
তারেক রহমানের এই ‘I have a dream’ বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপ করতে ছাড়েননি নির্বাসিত সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তসলিমা প্রশ্ন তুলেছেন, তারেক জিয়া আদৌ বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারবেন কি না? তাঁর মতে, তারেকের এই পরিকল্পনা আগের চেয়েও ‘বিপজ্জনক’ হতে পারে। অন্যদিকে, ওপার বাংলার এই অস্থিরতায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে আবারও অডিও বার্তা দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘ফ্যাসিস্ট ও দুর্নীতিবাজ’ তকমা দিয়ে হাসিনা দাবি করেছেন, আওয়ামি লিগকে বাদ দিয়ে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তা স্রেফ একটি প্রহসন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুশলবরণ চক্রবর্তীর মতে, তারেক রহমান দেশে থেকে সংগঠন চালালে বিএনপির তৃণমূল স্তরে নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে। যদিও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বিএনপির ওপর একধরণের অনাস্থা রয়েছে, তবে তারেক যদি তাঁদের মন জয় করতে পারেন, তবে তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনবে। নির্বাচনের আগে আওয়ামি লিগের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং তারেকের এই ‘মাস্টারপ্ল্যান’—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদ দখলের লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।