কাশির সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে পরপর শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এবার বড়সড় পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস (DGHS) বাচ্চাদের কাশির ওষুধ দেওয়া নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা জারি করেছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের কোনওভাবেই কাফ-সিরাপ দেওয়া যাবে না।
মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলায় গত দু’সপ্তাহে কিডনি বিকল হয়ে ন’জন শিশু মারা গেছে। রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রেও একই ধরনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের সন্দেহ, এই মৃত্যুর সঙ্গে কাশির সিরাপের সম্পর্ক থাকতে পারে। মৃত শিশুদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন একটি নির্দিষ্ট কাশির সিরাপ খেয়েছিল বলে জানা গেছে।
সিরাপ নিয়ে সংস্থার দাবি: ভেজাল নেই, তবুও সতর্কতা
যে কাশির সিরাপকে (ডেক্সট্রোমেথরফ্যান হাইড্রোব্রোমাইড) এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছিল, সেটির প্রস্তুতকারক ও সরকারি সরবরাহ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপর কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (CDSCO) ওষুধটির নমুনা পরীক্ষা করে জানিয়েছে, “এখনও পর্যন্ত কোনও ধরনের ভেজাল পাওয়া যায়নি। সিরাপ থেকে বিষক্রিয়ার অভিযোগও ভিত্তিহীন।”
তবে ভেজাল না থাকার দাবি সত্ত্বেও, পরপর শিশু মৃত্যু ঘিরে তৈরি হওয়া উদ্বেগের কারণেই DGHS এই কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তদন্ত ও রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ:
মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতরের এক তদন্তকারী দল জানিয়েছে, জব্বলপুরের কাটারিয়া ফার্মা থেকে একটি সিরাপ বিতরণ করা হয়েছিল, যা চেন্নাইয়ের এক সংস্থা থেকে কেনা হয়েছিল।
১৬টি ভায়ালের নমুনা পরীক্ষার জন্য ভোপালে পাঠানো হয়েছে এবং ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আগাম সতর্কতা হিসেবে তামিলনাড়ু সরকার কোল্ডরিফ কাফ সিরাপ রাজ্যে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে এবং কোম্পানির কাঞ্চিপুরম কারখানা থেকে কোনো ওষুধ বাজারে না বেরোনোর নির্দেশ দিয়েছে।
এই নির্দেশিকা পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, যতই জেনেরিক হোক না কেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া ২ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের কাফ সিরাপ দেওয়া এখন থেকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে।