নয়ডার একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে ১৫ মাসের এক শিশু-কন্যার উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে, যা বাবা-মায়েদের মধ্যে গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রথমদিকে শিশুর উরুতে কামড়ের দাগ দেখে তার মা অ্যালার্জি বলে মনে করলেও, চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় এটি আসলে মানুষের কামড়ের চিহ্ন। এরপর ডে-কেয়ার সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ চিত্র।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নয়ডার সেক্টর ১৩৭-এর ‘পারস টিরিয়া’ আবাসনে অবস্থিত একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে। এই আবাসনে বসবাসকারী কর্মজীবী দম্পতিরা তাদের সন্তানদের এখানে রেখে কাজে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শিশুর কান্না থামাতে ব্যর্থ হয়ে এক পরিচারিকা তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, পরিচারিকা প্রথমে শিশুটিকে চড় মারছে, তারপর ইচ্ছে করে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে এবং তার মাথা দেওয়ালে ঠুকে দিচ্ছে। এমনকি দরজা বন্ধ করে প্লাস্টিকের ব্যাট দিয়ে শিশুটিকে মারার দৃশ্যও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।
আক্রান্ত শিশুটির বাবা-মা সঙ্গে সঙ্গে সেক্টর ১৪২ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্ত পরিচারিকাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে।
তবে এই ঘটনায় শুধু পরিচারিকা নয়, ডে-কেয়ার মালিকের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিশুর বাবা-মা। তাঁদের অভিযোগ, যখন তাঁরা ডে-কেয়ার মালিককে পরিচারিকার অত্যাচারের কথা জানান, তখন তিনি তা মানতে চাননি। উল্টো তাঁদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ। আরও জানা গেছে যে, এই ডে-কেয়ারে শিশুদের দেখভালের জন্য কোনো দক্ষ কর্মী নিয়োগ না করে নাবালিকাদের দিয়ে কাজ করানো হতো। ১৫ মাসের এই শিশুটিকেও এক নাবালিকা পরিচারিকা নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই কর্মজীবী বাবা-মায়েদের মধ্যে সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বাবা-মায়েরা নিশ্চিন্তে তাদের সন্তানকে রেখে যেতে চান, সেখানে এই ধরনের ঘটনা সেই আস্থার উপর বড় আঘাত। অনেকেই এখন ডে-কেয়ার সেন্টারের কর্মীদের যোগ্যতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।