হিন্দু যুবককে পিটিয়ে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে অগ্নিসংযোগ! ওপার বাংলায় বীভৎসতা চরমে!

অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওপার বাংলায় কার্যত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই চরম অরাজকতার মাঝেই শিউরে ওঠার মতো খবর এল ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকা থেকে। ধর্মীয় অবমাননার ঠুনকো অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাস নামে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যা করার পর তাঁর দেহ গাছে বেঁধে পুড়িয়ে দেওয়ার নৃশংস অভিযোগ উঠেছে একদল উগ্রপন্থীর বিরুদ্ধে।

ভালুকায় সংখ্যালঘু নিধন: উত্তাল বিজেপি

ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পোশাক কারখানার কর্মী দীপু চন্দ্র দাসের মরদেহ গাছে বেঁধে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের বিজেপি নেতৃত্ব। অমিত মালব্য এবং বঙ্গ বিজেপি সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার কড়া নিন্দা করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বঙ্গ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, দীপু দাসের এই পরিণতি কেবল বাংলাদেশের একার সংকট নয়, এটি একটি সামগ্রিক আদর্শিক আক্রমণের প্রতিফলন।

কণ্ঠরোধ সংবাদমাধ্যমের: বন্ধ ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেইলি স্টার’

নৈরাজ্যের আগুন থেকে রেহাই পায়নি সংবাদমাধ্যমও। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম— ‘প্রথম আলো’ এবং ‘ডেইলি স্টার’-এর অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, স্বাধীনতার পর এই প্রথম ‘প্রথম আলো’ তাদের শুক্রবারের ছাপা সংস্করণ প্রকাশ করতে পারেনি। এমনকি আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে তাদের অনলাইন পোর্টালও। একইভাবে স্তব্ধ রয়েছে ডেইলি স্টারের অনলাইন পরিষেবা।

কেন এই তাণ্ডব?

পুরো ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ছাত্রনেতা ওসমান হাদি। গত ১২ ডিসেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে আহত হওয়া হাদি গত রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হাদিকে ‘শহিদ’ ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেও, রাজপথের দখল নিয়েছে কট্টরপন্থীরা।

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত

বিক্ষোভকারীরা শুধুমাত্র রাজপথ অবরোধ করেই ক্ষান্ত থাকেনি। বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কট্টরপন্থীরা ধর্মীয় স্লোগান তুলে একের পর এক ঐতিহ্যবাহী ভবনে আগুন দিচ্ছে। এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের মতে, দেশ এখন পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধের কবলে।

প্রতিবেশী দেশের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘু হিন্দু ও সাংবাদিকদের ওপর এই নৃশংস আক্রমণ ভারতের কূটনীতি ও নিরাপত্তার জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy