অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে আজ শনিবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হচ্ছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। বেলা ২টোর সময় ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হবে।
হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোনের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জানাজায় আগত সাধারণ মানুষের প্রতি প্রশাসনের বিশেষ অনুরোধ—কোনও প্রকার ভারী ব্যাগ বা সন্দেহজনক বস্তু যেন সাথে না আনা হয়। ডিএমপি এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডাকসু) নেত্রী ফতিমা তাসনিম জুমা নিশ্চিত করেছেন যে, শরিফ ওসমান হাদির শেষ ইচ্ছা ও সম্মানের কথা মাথায় রেখে তাঁকে জাতীয় কবির সমাধির পাশেই কবর দেওয়া হচ্ছে। জানাজা শেষে মাণিক মিঞা অ্যাভিনিউ হয়ে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় এসে জড়ো হচ্ছেন।
যেভাবে হামলা ও মৃত্যু
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে ঢাকায় রিকশা করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা হাদিকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে গুলি চালায়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা চললেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে দ্রুত সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। গত শুক্রবার বিকেলে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মরদেহ জাতীয় পতাকায় মুড়ে বাংলাদেশে আনা হয়।
উত্তাল বাংলাদেশ: ঘনীভূত হচ্ছে সংকট
হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওপার বাংলার পরিস্থিতি এখন অগ্নিগর্ভ। দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক। তবে এরই মধ্যে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং অস্থিরতার খবর আসছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। একদিকে শোকের ছায়া, অন্যদিকে বাড়তে থাকা ভারত-বিরোধী স্লোগান ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা—সব মিলিয়ে এক চরম সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এখন দেখার, ড. ইউনূস প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে কি না।