দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা খুনের ঘটনায় পুলিশের স্ক্যানারে থাকা রাজগঞ্জের বিডিও (BDO) প্রশান্ত বর্মনের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে বারাসাত আদালত। যদিও সরকারি আইনজীবীর পক্ষ থেকে কোর্টে এই জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে।
আদালতে সরকারি আইনজীবীর দাবি:
বিডিও-র আগাম জামিনের শুনানিতে সরকারি আইনজীবী কোর্টে জোরালো সওয়াল করেন। তিনি দাবি করেন:
-
বিডিও-ই মূল চক্রী: স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের মূল চক্রী হলেন বিডিও প্রশান্ত বর্মণ।
-
মারধরের ফুটেজ: পুলিশের হাতে ইতিমধ্যেই বিডিও-র ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বেল্ট ও জুতো দিয়ে মারধরের ফুটেজ এসেছে।
-
গ্রেফতারি গুরুত্বপূর্ণ: সরকারি আইনজীবী আদালতকে জানান, বিডিও-ই মূল অভিযুক্ত, এবং তদন্তের স্বার্থে তাঁর গ্রেফতারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ:
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্তের মোবাইল ভিডিওতে চাঞ্চল্যকর ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের দাবি, বিডিও-ই মূল অভিযুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে কোর্টে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনা হয়েছে:
-
বিডিও-র ভূমিকা: দুটি গাড়ি নিয়ে (যার মধ্যে একটি নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছিল বলে খবর) বিডিও প্রশান্ত বর্মণ দত্তাবাদে পৌঁছেছিলেন।
-
তথ্য সংগ্রহ: তিনি সোনার দোকানের সাইনবোর্ড থেকে নম্বর নেন এবং প্রভাব খাটিয়ে আধার কার্ডের তথ্য থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার মেদিনীপুরের ঠিকানা জোগাড় করেন।
-
আঘাতের চিহ্ন: পুলিশ আরও দাবি করেছে, স্বর্ণ ব্যবসায়ীর শরীরে ৩২টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।
খুনের ঘটনা:
মেদিনীপুরের বাসিন্দা স্বপন কামিল্যা দত্তাবাদের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সোনার ব্যবসা করতেন। গত ২৮ অক্টোবর, তাঁকে দত্তাবাদ থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অনুমান, মারের চোটেই স্বপন কামিল্যার মৃত্যু হয়। পরে নিউটাউন থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
যদিও দত্তাবাদকাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকেই বিডিও প্রশান্ত বর্মণ বারবার দাবি করে এসেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সওয়াল-জবাব শোনার পর বারাসাত আদালত বিডিও-র আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।