বেঙ্গালুরুর এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের স্বপ্নের বাড়ি তৈরিই তাঁর জীবনের কাল হলো। বুধবার সকালে এক নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলা থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত আইটিপিএল কর্মী মুরলী গোবিন্দরাজু (৪৫)-এর দেহের পাশ থেকে একটি ১০ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
সুইসাইড নোটের অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুইসাইড নোটে মুরলী তাঁর প্রতিবেশী এবং গ্রেটার বেঙ্গালুরু পুরসভার (বিবিএমপি) কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন প্রতিবেশী শশী নাম্বিয়ার (৬৪) ও উষা (৫৭) এবং পুরসভার কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধে।
-
গ্রেপ্তার: ঘটনার পরপরই নাম্বিয়ার দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
-
পলাতক: নাম্বিয়ার দম্পতির ছেলে বরুণ ঘটনার পর থেকেই পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
২০ লক্ষ টাকার জরিমানা এবং মানসিক চাপ
মুরলী ২০১৮ সালে নাম্বিয়ার পরিবারের কাছ থেকে ৪০x৬০ বর্গ ফুটের জমি কিনেছিলেন। সেখানেই তিনি নিজের বাড়ি তৈরি করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী নাম্বিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
-
বারবার অভিযোগ: উষা এবং শশী বারবার অভিযোগ করেন যে মুরলী অনুমোদিত প্ল্যান না মেনে বাড়ি তৈরি করছেন। এই অভিযোগ তুলে মুরলীর কাছে ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা দাবি করে নাম্বিয়ার পরিবার।
-
টাকা না দেওয়ায় চাপ: মুরলী সেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় উষা বেঙ্গালুরু পুরসভায় অভিযোগ দায়ের করেন।
-
হুমকি: পুলিশ জানিয়েছে, মুরলী তাঁর মা-কে লেখা সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন, নাম্বিয়ার পরিবারের সদস্যরা বারবার তাঁর ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। বুধবারই সেই ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার শেষ দিন ধার্য করেছিলেন এই দম্পতি।
-
আইনি জটিলতা: পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ২০১৮ সাল থেকে মুরলীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর ফলে মুরলীকে পুরসভা, পুলিশ স্টেশন এবং স্থানীয় আদালতে বারবার ছুটতে হয়েছে। বুধবারও তাঁর কোর্টে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছিল।
বুধবার সকাল ৬টা নাগাদ মুরলী বাড়ি থেকে বেরিয়ে নির্মীয়মাণ বাড়িতে যান এবং সেখানেই আত্মহত্যা করেন।