বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন এবং তাঁর ৮ বছরের নাবালক সন্তান অবশেষে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরলেন। মালদহের সীমান্তে এই মুহূর্তে জেলা শাসক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কর্তারা উপস্থিত থেকে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ:
-
বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা সোনালি বিবি ও সুইটি বিবির পরিবার কাজের সন্ধানে দিল্লিতে গিয়েছিলেন।
-
তাঁদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও গত ১৭ জুন দিল্লি পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয়।
-
এই সন্দেহের বশে ২৬ জুন ছ’জনকে অসমের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ‘পুশব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। সেই সময় সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
-
বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আটক করে এবং মামলা রুজু করে। প্রায় ১০০ দিনেরও বেশি সময় তাঁরা স্থানীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন।
-
এই মামলায় সকলেই জামিন পাওয়ার পর শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় যে যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিকে দিল্লি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাই মানবিকতার খাতিরে তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে।
কেন্দ্রের অবস্থান ও তৃণমূলের ক্ষোভ:
কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বারবার দাবি করেন, সোনালি বিবি ও বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক। শুধু মানবিকতার খাতিরে কেন্দ্রীয় সরকার সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে ভারতে আনার অনুমতি দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সোনালী ও তাঁর সন্তান ভারতে ফিরলেও তাঁর স্বামী-সহ আরও অনেকে বাংলাদেশে রয়ে গেছেন। সোনালীর স্বামী-সহ অন্যদেরও ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বাল এবং সঞ্জয় হেগড়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন।
সোনালী খাতুনের স্বামীসহ অন্যান্য সদস্যরা দেশে না ফেরার জন্য ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা বর্মন-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব।
-
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বাকিদেরও অবিলম্বে ফেরাতে হবে।
-
তাঁরা সীমান্তে উপস্থিত ডেপুটি হাই কমিশনারকে প্রশ্ন করেন—সোনালীকে ফেরানো হলেও বাকি চারজনকে কেন ছাড়া হলো না? এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।