সোনার দামে হু হু করে নিত্যনতুন রেকর্ড গড়ার প্রবণতা অব্যাহত। সোমবার কলকাতায় ১০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৩০০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৪,৯৫০ টাকায়। অন্যদিকে, ২৪ ক্যারেট ১০ গ্রাম সোনার দাম গতকালের থেকে ৩২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছেছে ১,২৫,৪০০ টাকায়। এই আকাশছোঁয়া দাম দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, এটি কি দেশের অর্থনীতির জন্য কোনো অশনি সংকেত?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে বাংলা.আজতক.ইন-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং Manasi Research Foundation-এর চেয়ারম্যান মানসকুমার ঠাকুরের সঙ্গে।
সোনার দাম বৃদ্ধি কি অর্থনীতির দুর্বলতার ইঙ্গিত?
মানসকুমার ঠাকুরের মতে, সোনার দাম বাড়ার সঙ্গে ভারতের অর্থনীতি খারাপ দিকে যাওয়ার আপাতত কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি স্পষ্ট জানান, দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হল চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব।
তিনি বলেন, “অনেকেই সোনাকে সুরক্ষিত বিনিয়োগের রাস্তা হিসাবে ধরছেন। যার ফলে তারা ফিজিক্যাল গোল্ড কেনার পাশাপাশি গোল্ড বন্ড এবং ইটিএফ-এও বিনিয়োগ করছেন। এই বিপুল চাহিদাই সোনার দাম বাড়াচ্ছে। এর সঙ্গে দেশের কোম্পানিগুলোর অবস্থা খারাপ হওয়ার বা অর্থনীতির পতনের কোনো সম্পর্ক নেই।”
ভারতের অর্থনীতি নিয়ে আশার বার্তা:
মানসবাবু আরও জানান, বর্তমানে দেশের অর্থনীতি বেশ ভালো অবস্থাতেই রয়েছে। অহেতুক দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই। তিনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন:
১. MSME শিল্পের বিকাশ: দেশের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলি (MSME) দ্রুত বড় হচ্ছে, যা অর্থনীতির পক্ষে অত্যন্ত ভালো খবর।
২. যুব সমাজের বিনিয়োগ: একসময় স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে ভয় পেলেও এখন যুবসমাজ মুনাফার আশায় বাজারে টাকা ঢালছে। পাশাপাশি অনেকেই সুরক্ষার আশায় সোনাতে বিনিয়োগ করছেন।
তিনি মনে করিয়ে দেন, সারা পৃথিবীর মোট সোনার প্রায় ১১ শতাংশ রয়েছে শুধু ভারতের ঘরে ঘরে। আসন্ন ধনতেরাসেও প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার সোনা ও রুপোর ব্যবসা হবে, যা স্বাভাবিকভাবেই দামকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। তাই এই দাম বৃদ্ধিকে অর্থনৈতিক দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে না দেখে, চাহিদা ও বিনিয়োগের ফল হিসেবে দেখা উচিত।