বলিউডের রুপোলি পর্দায় ‘বীর-জারা’ বা ‘গদর’-এর গল্প আমরা অনেক দেখেছি। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে প্রেমিকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ঘটনা বিরল। এমনই এক দুঃসাহসিক ও নাটকীয় কাণ্ড ঘটিয়ে বসলেন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের যুবক বাদল। ফেসবুক প্রেমিকার টানে পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ কারাভোগের পর অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেতে চলেছেন এই ‘বাস্তবের নায়ক’।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালে। আলিগড়ের খাটিগপুর এলাকার বাসিন্দা বাদলের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় পাকিস্তানের মান্ডি বাহাউদ্দিনের তরুণী সানা রানির। চ্যাট থেকে শুরু হওয়া বন্ধুত্ব দ্রুত প্রেমে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভালোবাসার টানে কোনো বৈধ নথি ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েন বাদল। সানার বাড়িতে পৌঁছালেও তাঁর মা এই অবৈধ অনুপ্রবেশ মেনে নেননি। নিরাপত্তার খাতিরে তাঁকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলা হয়, কিন্তু বাদল অনড় ছিলেন।
এর ঠিক তিনদিন পর, ২৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে মামলা দায়ের করা হয়। এমনকি প্রেমের নেশায় বাদল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সানাকে বিয়ে করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। জেল থেকে লেখা তাঁর একটি চিঠি ভাইরাল হয়েছিল যেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি আর ভারতে ফিরতে চান না। তবে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর বড় কোনো অপরাধ না পাওয়ায় পাকিস্তানি আদালত তাঁকে মুক্তি দিয়েছে। বর্তমানে ডিটেনশন সেন্টারে থাকা বাদলের পরিবারকে শুক্রবার ফোন করে তাঁর মুক্তির খবর জানিয়েছে পাক কর্তৃপক্ষ। আলিগড়ের বাড়িতে এখন শুধু তাঁর ফেরার অপেক্ষা।