বাঙালির ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’-এর জন্য পদ্ম ফুলের চাহিদা থাকে সারা বছর, বিশেষ করে দুর্গাপূজা, কালীপূজা এবং লক্ষ্মীপূজার সময়। আর এই চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামগুলি। আহমেদপুর থেকে পদ্মফুল শুধু দেশের বিভিন্ন শহরে নয়, পাড়ি দিচ্ছে আমেরিকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটানের মতো দেশেও।
পদ্ম চাষিরা জানান, আহমেদপুরের গ্রামগুলি থেকে সরাসরি বিদেশে পদ্ম যায় না। প্রথমে ফুলগুলি কলকাতার বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে বিশেষ প্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্লেনে করে বিদেশে রফতানি করা হয়। এই বিশেষ প্যাকিং-এর জন্য পদ্মফুলগুলিকে পাতা এবং বরফের সঙ্গে বাক্সে ভরে পাঠানো হয়, যাতে তা সতেজ থাকে। নিজেদের চাষ করা ফুল বিদেশে যাচ্ছে, এতে গর্বিত পদ্মচাষিরা।
তবে এই গর্বের পাশাপাশি তাদের আক্ষেপও কম নয়। অতি বৃষ্টির কারণে পদ্ম চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যার ফলে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। পদ্মচাষি ও মহাজনদের অভিযোগ, বাজারের দামের সঙ্গে তুলনা করলে তারা খুব কমই লাভ পাচ্ছেন। বর্তমানে বীরভূমের এক একটি পদ্ম চার থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হলেও, বেঙ্গালুরুতে সেই পদ্মের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়।
বীরভূম পদ্ম চাষের জন্য খুব উপযোগী। এখানকার পুকুর ও ছোট জলাশয়গুলোতে ব্যাপক পদ্ম চাষ হয়। দুর্গাপূজা, লক্ষ্মীপূজা এবং কালীপূজার সময় চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ ছাড়াও সরস্বতী পূজার সময়ও পদ্মের প্রয়োজন হয়। আহমেদপুর থেকে পদ্ম ফুল কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, কেরালা এবং রাজস্থানের মতো বড় শহরগুলিতে সরবরাহ করা হয়। সামনেই বেঙ্গালুরুতে লক্ষ্মীপুজো থাকায় সেখানে পদ্মের চাহিদা এখন তুঙ্গে।