দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দলিত ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি এবং জোরালো নিশানা করলেন বিজেপি সাংসদ বাঁশুরি স্বরাজ। তিনি অভিযোগ করেছেন, একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের হোমমিনিস্টার হওয়া সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ এবং তিনি এই ধরনের নৃশংস ঘটনায় ‘সাফাই’ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
রাজ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন:
বিজেপি সাংসদ বাঁশুরি স্বরাজ বলেন, “এক দলিত বাচ্চার গণধর্ষণ হয়েছে। সে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী। সে সন্ধ্যায় সাড়ে ৮টা নাগাদ বাইরে বেরিয়েছিল। মনে হয়, ডিনারে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এবং ৪ জন তাঁর সঙ্গে দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়। এতটাই ঘৃণার কাজ করেছে, যাতে যে কেউই শিউরে উঠবে।”
তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, “রাজ্যের সুরক্ষার দায়িত্ব তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, যিনি খোদ নিজেই রাজ্যের হোমমিনিস্টারও বটে। প্রত্যেক মহিলাই যেন যে কোনো সময় বেরোতে পারে, সেই দায়িত্ব তাঁরই। তাঁর থেকে এটাই আশা করা হয় যে, তিনি রাজ্যকে এতটাই সুরক্ষিত করে দেবেন, যে মহিলারা যে কোনো সময়েই বাইরে বের হতে পারবেন, নির্ভয় হয়ে… সেখানে এই গণধর্ষণ ঘটনায় সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
পূর্ববর্তী ঘটনা টেনে আক্রমণ:
বাঁশুরি স্বরাজ অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনা নতুন নয়, বরং এটি একটি ‘পুরো প্যাটার্ন’ তৈরি হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের ঘটনাকে লঘু করে দেখেন বলে তিনি অভিযোগ করেন এবং অতীতের বেশ কয়েকটি ঘটনা টেনে আনেন:
পার্ক স্ট্রিট কাণ্ড (২০১২): “আপনাদের মনে থাকবে, ২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিটে খুবই নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কী বলেছিলেন? আরও একবার তিনি নির্যাতিতার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বলেছিলেন, সাজানো ঘটনা।”
হাঁসখালি কাণ্ড: “নাবালিকার সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেছিলেন? পুরো ঘটনাটাকেই ট্রিভিলাইজড (trivialized) করে কী বলেছিলেন, এটা একটা প্রেমের ঘটনা!”
আরজিকর কাণ্ড: “আরজিকর কাণ্ডে বলেছিলেন, ধর্ষণের ঘটনা তো হতেই থাকে। এখন ছেলেমেয়েরা হাতে হাত ধরে ঘোরাফেরা করে, আগে যদি এমন দেখতে পাওয়া যেত, তখন তাঁদের বকাঝকা করা হত।”
বাঁশুরি স্বরাজের এই কড়া মন্তব্যগুলি দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতোর আরও বাড়িয়ে দিল।