দুর্গাপূজার সপ্তমী পেরোতে না পেরোতেই ফের রাজনৈতিক তরজা ঘনীভূত হল। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সপরিবারে হাজির হলেন দুর্গাপুরের শংকরপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের আদলে গড়া এই পুজো মণ্ডপটির ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মণ্ডপ ঘুরে দেখার পর বিজেপি সাংসদ প্রকাশ্যে দাবি করেন, তিনি এখানে শুধুই প্রতিমা ও মণ্ডপ দর্শনে এসেছেন এবং এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তাঁর এই বক্তব্যই রাজনৈতিক মহলে নতুন সমীকরণ ও জোরালো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তৃণমূল নেতার মণ্ডপে সাংসদ
জানা যাচ্ছে, এই শংকরপুর পুজোর উদ্যোক্তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল নেতার পুজোয় বিজেপি সাংসদের এই উপস্থিতি বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
পুজো কমিটির সভাপতি ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্বাধীন ঘোষ অবশ্য বিষয়টি হালকা করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর কথায়, “পুজো কারও একার নয়। মা দুর্গা সবার। মণ্ডপে যে-ই আসুক, সকলকে স্বাগত জানানো হয়।”
তবে স্বাধীন ঘোষ সাংসদকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন দিঘায় গিয়ে আসল জগন্নাথ মন্দিরও দেখে আসেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার শিল্প ও ধর্মকে একসঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন।
রাজনৈতিক যাত্রাপথে নাটক
সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এবারে সেই একই আবহ ফিরে এল সৌমিত্র খাঁকে ঘিরে।
রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, সৌমিত্র খাঁ-র রাজনৈতিক যাত্রাপথ যথেষ্ট নাটকীয়। একসময় কংগ্রেস, তারপর তৃণমূলের হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। পরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূল তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। বর্তমানে তিনি বিজেপির সক্রিয় নেতা।
তাই সপ্তমী রাতে দিঘার জগন্নাথধামের আদলে তৈরি এবং মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন করা মণ্ডপে তাঁর এই উপস্থিতি নিছক দুর্গাদর্শন, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক তাৎপর্য লুকিয়ে আছে, সেই নিয়েই এখন নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে।