শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে টাকা তোলার বিস্ফোরক অভিযোগ! যাদবপুর VC-অধ্যাপকের অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ করে সরব বিজেপি

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দফতরকে ‘দেশের সবথেকে বড় দুর্নীতির আখড়া’ বলে শুক্রবার গুরুতর অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা শঙ্কু দেব পন্ডা। এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এবং ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডলের মধ্যে কথোপকথনের একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ করেন। তবে ইটিভি ভারত এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি।

প্রকাশিত অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, যাদবপুরের উপাচার্য (VC) চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডলকে বলছেন যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে (Bratya Basu) ‘টাকা তুলে দিতে না পারলে’ আর পদে থাকা যাবে না। এরপরই শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে বিজেপি।

শঙ্কু দেব পন্ডার অভিযোগ:

শঙ্কুদেব পন্ডার অভিযোগ, এই কথোপকথনে পরিষ্কার যে ‘তৃণমূল মানেই দুর্নীতি’ এবং এই দুর্নীতিতে শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে নবান্ন পর্যন্ত জড়িত।

  • টাকা তুলতে ব্যর্থ VC: শঙ্কুদেবের দাবি, সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হওয়া চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভপতি পদেও রয়েছেন। কিন্তু তিনি ‘কাঙ্ক্ষিত টাকা তুলে দিতে পারছেন না’ বলে ব্রাত্য বসু তাঁর উপর ভরসা রাখতে পারছেন না।

  • রেজিস্ট্রার পদে তৃণমূল নেতা: টাকা তুলতে না পারার কারণেই শিক্ষামন্ত্রী নাকি রেজিস্ট্রার হিসেবে তৃণমূল নেতা সেলিম বক্সকে আনতে বলেছেন, যিনি ব্রাত্যবাবুর ‘কাঙ্ক্ষিত টাকা তুলে দিতে পারেন’।

  • নবান্নের যোগ: শঙ্কুদেবের আরও অভিযোগ, অডিয়ো ক্লিপে বলা হয়েছে এই টাকা ‘ম্যাডামের’ কাছে যাবে—নাম না করে যার মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এই টাকা তুলে দেওয়ার কথা নাকি নবান্ন থেকেই বলা হচ্ছে।

দাবি ও তদন্তের আহ্বান:

বিজেপি নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, “এর পরেও ব্রাত্য বসু কী করে তাঁর পদে রয়েছেন? তিনি পদত্যাগ করছেন না কেন?” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কাদের উপাচার্য করে এনেছি? কারা এরা?”

  • এফআইআর ও চাপ: শঙ্কু পন্ডা জানান, এই অডিয়োটি মনোজিৎ মণ্ডল করেছেন এবং তিনিও তৃণমূলের নেতা। তিনি স্বীকার করেছেন যে এটি তাঁরই গলা। যদিও চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য যাদবপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। শঙ্কুদেবের দাবি, চিরঞ্জীব তাঁর অভিযোগ পত্রের শেষ লাইনে পুলিশকে এই অডিয়ো ক্লিপ সোশাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং এফআইআর-এ লিখেছেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রীর চাপ রয়েছে।’

  • কেন্দ্রীয় তদন্তের দাবি: শঙ্কু দেব পন্ডা বলেন, রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল। তাই তাঁর কাছে এই অভিযোগ জানানো হবে এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানানো হবে। তাঁর অভিযোগ, এই দুর্নীতি শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এতে সরাসরি বিকাশ ভবন (শিক্ষা দফতর) এবং নবান্ন যুক্ত রয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy