দিল্লির লালকেল্লার (New Delhi Red Fort) সামনে গত ১০ নভেম্বর যে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ (Car Blast) ঘটেছিল, সেই ঘটনার দায় সরাসরি পাকিস্তানের (Pakistan) দিকে ঠেলে দিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (POK) সদ্যপ্রাক্তন প্রধান চৌধুরি আনোয়ারুল হক। তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
পিওকে নেতার বিস্ফোরক মন্তব্য: পিওকে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে চৌধুরি আনোয়ারুল হক দাবি করেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ‘লালকেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল পর্যন্ত আঘাত করা হয়েছে’ এবং এই সাফল্যের কৃতিত্ব পাকিস্তানকেই দেওয়া উচিত। তাঁর দাবি, ‘আমাদের সাহসী যোদ্ধারাই এই হামলা সফল করেছে।’
-
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া: ইসলামাবাদ এই মন্তব্য নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও, পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ বলেছেন, অঞ্চলে উত্তেজনা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ পরিস্থিতিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তদন্তে উঠে এল জইশ-ই-মহম্মদের যোগ: তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিস্ফোরিত গাড়িটিকে (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ফুয়েল অয়েলে ভরা একটি হুন্ডাই আই২০) জইশ-ই-মহম্মদের (JeM) সঙ্গে যুক্ত বলে চিহ্নিত করেছে।
-
মাস্টারমাইন্ড: জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার মৌলবী ইরফান আহমেদ নামের এক ধর্মীয় নেতা ১০ সদস্যের এই সেলটি গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল জইশের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে।
-
হামলাকারী: ইরফানই আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন তরুণ চিকিৎসককে প্রভাবিত করেন। তাঁদের মধ্যে ডাঃ উমর মহম্মদ ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী, যিনি গাড়িবোমায় নিহত হন।
-
হ্যান্ডলার: তদন্তে উঠে এসেছে পাকিস্তানভিত্তিক জইশ অপারেটিভ উমর-বিন-খাত্তাব ওরফে হানজুল্লা ছিল এই হামলার অন্যতম হ্যান্ডলার। ইরফানসহ মডিউলের অধিকাংশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মহিলাদের নেতৃত্বে হামলার ছক ও অর্থ সংগ্রহ: গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, জইশ বিভিন্ন জায়গায় ‘ফিদায়েঁ’ হামলার জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছে এবং মহিলাদের নেতৃত্বে বিশেষ হামলার পরিকল্পনাও করছে। মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া জইশের মহিলাবাহিনী, জামাত-উল-মুমিনাত-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। লালকেল্লা মামলার গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহভাজন ডাঃ শাহীন সাইদ, কোডনেম ‘ম্যাডাম সার্জন’, সেই ইউনিটের সদস্য বলেই ধারণা।
গোয়েন্দাদের মতে, লস্কর (LeT) ও জইশ—দুই সংগঠনই জম্মু-কাশ্মীরে নতুন ধারাবাহিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।