রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিটার নাভারো তো সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ আসলে ‘মোদীর যুদ্ধ’। তার দাবি, রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কিনে ভারত আসলে মস্কোকে সাহায্য করছে।
ভারতের পক্ষে বিশেষজ্ঞরা
তবে বিশেষজ্ঞরা পিটার নাভারোর এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের মতে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে বিশ্বজুড়ে একটি বড়সড় তেল সংকট এড়িয়েছে। যদি ভারত এই তেল না কিনত, তাহলে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ২০০ ডলারে পৌঁছে যেত।
বিজনেস টুডে-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের এই পদক্ষেপের কারণে বিশ্ববাজার অনেক স্থিতিশীল হয়েছে। এমনকি মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেনসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ভারতের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানির ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তেল বাজারের একচেটিয়া আধিপত্য অনেকটাই কমেছে।
কী বলেছিলেন নাভারো?
ব্লুমবার্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিটার নাভারো বলেন, ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই ২৫ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে।
তবে শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় শোধনাগারগুলো রাশিয়ান তেল কেনার জন্য মার্কিন ডলার ব্যবহার করে না। তারা অন্য কোনো দেশের মুদ্রায় যেমন, এএইডি (AED) বা অন্য কোনো মুদ্রায় লেনদেন করে। এছাড়া, বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন যে, মার্কিন সরকার কখনোই ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে বলেনি। ভারতের এই ব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ এবং জি৭ (G7) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেঁধে দেওয়া দামের সীমার (প্রাইস ক্যাপ) মধ্যেই হয়েছে।
শিল্প বিশেষজ্ঞরা এটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, রাশিয়ার তেলের ওপর ইরান বা ভেনেজুয়েলার মতো কোনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা নেই। পশ্চিমা দেশগুলো শুধু মুনাফার লোভ ঠেকাতে একটি নির্দিষ্ট দামের সীমা ঠিক করে দিয়েছে। তারা চাইলেই রাশিয়ান তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারত, কিন্তু সেটা করলে পুরো বিশ্ববাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ত। তাই তারা সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।