দু’দিনের ভারত সফরে এসে বিশ্ব মঞ্চে বড় বার্তা দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলন শেষে হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুতিন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার পাশাপাশি পুতিন সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিশানা করে ভারতের কাছে তেল বিক্রির প্রশ্নে কড়া অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
আমেরিকাকে ঘুরিয়ে জবাব, ভারতকে ‘অবাধ’ তেল সরবরাহ: রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের আবহে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে পশ্চিমী দুনিয়ার চাপ সত্ত্বেও পুতিন ভারতকে নির্বিঘ্নে এবং বাধাহীনভাবে তেলের জোগান দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ”জ্বালানি ক্ষেত্রে উভয় দেশই ব্যবসা করে সন্তুষ্ট। তাই তেল-গ্যাসের সেই ব্যবসাকে আবার আগের মতোই করে তুলতে চাই। আমরা একেবারে নির্বিচ্ছিন্ন ভাবে ভারতকে তেল পাঠাতেও প্রস্তুত রয়েছি।” এই বার্তা কার্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে উপেক্ষা করার রুশ কৌশল।
মোদী-পুতিনের যৌথ ঘোষণা: ভারত ও রাশিয়া একাধিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করার ঘোষণা করেছে:
-
বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে ৬৪ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
-
দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য: ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ৯৬ শতাংশ বাণিজ্য দেশীয় মুদ্রায় করার বিষয়ে দুই দেশ বদ্ধপরিকর।
-
পরমাণু ও প্রতিরক্ষা: ভারতে পরমাণু কেন্দ্র তৈরিতে রাশিয়া সাহায্য করবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একে অপরের হাত শক্ত করবে দুই দেশ।
-
সন্ত্রাসবাদ দমন: কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
-
উচ্চ প্রযুক্তি: কৃত্রিম মেধা, মহাকাশ গবেষণা এবং ব্রিকস এজেন্ডা নিয়েও দুই দেশ একযোগে কাজ করবে।
রুশ প্রেসিডেন্টের এই সফরের মূল সুর হল— আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করা এবং পশ্চিমী দুনিয়ার চাপ সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।