মৎস্য চাষে প্রযুক্তির ছোঁয়া! দুর্গম সুন্দরবন থেকে ড্রোনে শহর পৌঁছাবে টাটকা মাছ, খুশিতে আত্মহারা মহিলারা

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে টাটকা মাছ এবার ড্রোনে চেপে সরাসরি পৌঁছে যাবে শহরের বাজারে। যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মৎস্য চাষিদের ভাগ্য বদলাতে ২৯তম সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসবে প্রদর্শিত হলো এক অভাবনীয় প্রযুক্তি— কার্গো ড্রোন। সুন্দরবন মহিলা মৎস্য চাষি দিবসের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে কার্গো ড্রোনের মাধ্যমে মাছ পরিবহনের এই সফল প্রদর্শনী ভবিষ্যতে এক নতুন অর্থনৈতিক বিপ্লবের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এদিন সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রায় পাঁচ হাজার মহিলা মৎস্য চাষি সমবেত হয়েছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতে মেলার আকাশে ওড়ে অত্যাধুনিক কার্গো ড্রোন। আইসিএআর সিফ্রির অধিকর্তা ডঃ বসন্ত কুমার দাস জানান, পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ৭০ কেজি মাছ নিয়ে ড্রোনটি ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আবার নির্দিষ্ট স্থানে ফিরে আসে। সুন্দরবনের দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান এবং জোয়ার-ভাটা নির্ভর যাতায়াতের কারণে অনেক সময় বাজারে মাছ পৌঁছাতে দেরি হয়, ফলে মাছ নষ্ট হয়ে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যা মিটবে এবং চাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের উপ-মহানির্দেশক ডঃ জয়কৃষ্ণ জেনা এবং জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন পর্ষদের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ আর. অরুণ কুমার। মেলা কমিটির চেয়ারম্যান লোকমান মোল্লা বলেন, “সুন্দরবনের পুরুষরা অনেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। তাই মহিলারা এখন জীবিকার তাগিদে মাছ চাষে এগিয়ে এসেছেন। প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ পেলে এই মহিলারাই সুন্দরবনের আর্থ-সামাজিক চেহারা বদলে দেবেন।” বর্ষাকাল বা প্রতিকূল আবহাওয়ায় এই ড্রোন প্রযুক্তি সুন্দরবনের মৎস্য চাষিদের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy