কলকাতা। ২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লব’-এর চরম অস্থিরতার সময়ে তাঁর মাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছিল—এই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুত্র সাজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার পর এই প্রথম তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন।
হাসিনার পরবর্তী রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত সাজীব ওয়াজেদ জয়, ভারত সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ভারত সবসময় খুব ভালো বন্ধু। সঙ্কটের মুহূর্তে, ভারত আমার মায়ের প্রাণ বাঁচিয়েছে। সময়মতো উনি বাংলাদেশ ছেড়ে বেরতে না পারলে সন্ত্রাসীরা ওঁকে মেরে দিত।’’
তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমার মায়ের জীবন বাঁচানোর জন্য আমি ভারত সরকারের কাছ আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’’
বিচার নয়, প্রতিশোধ:
বিক্ষোভকারী ছাত্রদের উপর দমন-পীড়ন ও হত্যা চালানোর অভিযোগে গত সোমবার শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনাল। সাজীব ওয়াজেদ এই বিচারপ্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ ছাড়া আর কিছুই মানতে নারাজ। তাঁর স্পষ্ট দাবি, এই সাজা ঘোষণা করা হয়েছে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার অংশ হিসেবে।
বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সাজীব একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলেন: ‘‘আমার মাকে কোনও আইনজীবী নিয়োগ করতে দেওয়া হয়নি। তাঁর আইনজীবীদের আদালতে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। সাজা ঘোষণার আগে ১৭ জন বিচারককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছে। বেঞ্চে এমনও অনেকে ছিলেন যাঁদের বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞতা নেই এবং তাঁরা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। তাই, সেভাবে কোনও নিয়মই মানা হয়নি।’’
প্রত্যর্পণ ও সম্পর্কের তিক্ততা:
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর, নতুন করে তাঁকে প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারে বাংলাদেশ। সাজীব আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে ঢাকা-নয়াদিল্লির সম্পর্কে নতুন করে তিক্ততা আসতে পারে। প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কোনও প্রত্যর্পণ হতে হলে নির্দিষ্ট বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে। ওখানে তো কোনও নির্বাচিত, সাংবিধানিক, আইনি সরকারই নেই। আমার মাকে দোষী সাব্যস্ত করতে ওরা আইন বদলেছে, মামলা ফাস্ট ট্র্যাকে এসেছে। এই আইন বেআইনি ভাবে বদলানো হয়েছে।’’ সাজীবের কথায়, যেহেতু বর্তমান সরকার আইনত বৈধ নয়, তাই প্রত্যর্পণের দাবি অগ্রহণযোগ্য।