দেশের রাজধানী দিল্লিতে ফের প্রকাশ্যে এল এক হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড। দিল্লিতে নন্দ নগরী এলাকায় ভরা বাজারে ২০ বছরের এক তরুণীকে তাঁর প্রেমিক নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে নন্দ নগরী এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত তরুণী বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে বাজারে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর প্রেমিক আকাশ (২৩) তাঁকে ভরা বাজারে পরপর কুপিয়ে খুন করেন।
সন্দেহের জেরে হত্যাকাণ্ড
অভিযুক্ত আকাশ নন্দ নগরী এলাকারই বাসিন্দা এবং পেশায় সাফাইকর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, তরুণের সন্দেহ ছিল, প্রেমিকা অন্য কারও সঙ্গে নিত্যদিন কথা বলতেন এবং তাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। তরুণীর বিরুদ্ধে প্রতারণার সন্দেহই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর কারণ।
মৃতের মায়ের অভিযোগ: মৃত তরুণীর মা জানিয়েছেন, “সেদিন সকালে বাজারে সিঙ্গারা কিনতে পাঠিয়েছিলাম মেয়েকে। কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির সামনে চিৎকার করে এক তরুণ বলেন, ওকে মেরে ফেলেছি। বাড়ির বাইরে যেতেই স্কুলের সামনে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে থাকতে দেখি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত কয়েক মাস ধরেই অভিযুক্ত তরুণ তাঁর মেয়েকে চরম হেনস্থা করছিল।
তরুণীকে ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
নন্দ নগরী থানায় খুনের ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণী ও অভিযুক্ত তরুণ একে অপরের প্রতিবেশী ছিলেন এবং গত তিন-চার বছর ধরে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তরুণী সম্পর্ক থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে দেওয়ায় এই চরম পরিণতি।
দিল্লিতে আরেকটি হিংসাত্মক ঘটনা
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসেই দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আরও একটি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছিল। রবিবার রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় এক যুগলের মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। বচসার মাঝে ২০ বছরের এক তরুণ ১৯ বছরের তরুণীর উপর ছুরি নিয়ে হামলা করেন। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণী রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। এরপর তরুণ নিজেও নিজেকে কুপিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পথচারীদের খবরে পুলিশ এসে দু’জনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তরুণীর মুখ ও ঘাড়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হলেও বর্তমানে দু’জনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় তরুণের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।