মৃত যুবকের চোখ ‘উধাও’ কাণ্ড, ময়নাতদন্তকারী দলকে ধাওয়া পরিবারের, আজও বিক্ষোভে উত্তাল বারাসত মেডিক্যাল কলেজ

দুর্ঘটনায় মৃত যুবক প্রীতম ঘোষের চোখ ‘উধাও’ হওয়ার ঘটনায় আজও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বর। মৃত যুবকের চোখ কীভাবে উধাও হলো, সেই কারণ জানতে চেয়ে ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসকদের ধাওয়া করেন এবং হাসপাতাল সুপারের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কমিটি ও আশ্বাস:

মঙ্গলবার সন্ধেয় হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় আটকে যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাঁদের ক্ষোভ উগড়ে দিলে তিনি দ্রুত ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দেন। সেইসঙ্গে, মৃত যুবকের মাকে সরকারি চাকরি ও আর্থিক সাহায্য দেওয়ার এবং অন্যায়কারীর উপযুক্ত শাস্তির নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বুধবারই বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন শল্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর নীলাদ্রি সরকার। হাসপাতালের এমএসভিপি অভিজিৎ সাহা আশা করছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই স্বাস্থ্য ভবনে তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়বে।

পরিবারের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ:

পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্তের আগে যুবকের দু’টি চোখ অক্ষত ছিল, কিন্তু পরে বাঁ-চোখ উধাও হয়ে যায়। ক্ষুব্ধ পরিবারের দাবি:

  • দেহ নেবেন না: চোখ ছাড়া যুবকের দেহ তাঁরা নেবেন না।

  • ইঁদুর তত্ত্ব খারিজ: মৃতের আত্মীয় দীপু হাজরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘ইঁদুরে চোখ উপড়ে নিয়েছে’ তত্ত্ব মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “ইঁদুর যদি চোখ উপড়ে নেবে, তাহলে শরীরের অন‍্যান‍্য অংশ কীভাবে অক্ষত রয়েছে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলুক সত্যিটা কী!”

  • তুলসি পাতা বিতর্ক: তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “কোথাও শুনেছেন ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে গিয়ে লাশ কাটার ঘরে তুলসি পাতা দেওয়া হয়?”

পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথ্য চেপে যাচ্ছে। যদি চোখ কাউকে দানও করা হয়ে থাকে, সেটাও জানানো হচ্ছে না।

দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত নিয়ে টালবাহানা:

মুখ্যমন্ত্রী দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিলেও, বুধবার সকাল থেকে তা শুরু না হওয়ায় পরিবারের ক্ষোভ বাড়ে। দুপুর দু’টোর পর বিশেষ চিকিৎসক দল ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে ঢুকলে, শেষে তাঁরা মর্গ থেকে বেরনোর সময়ই তাঁদের ঘিরে ধরেন এবং ধাওয়া করেন পরিবারের লোকজন।

যদিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমএসভিপি অভিজিৎ সাহা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ভিডিয়োগ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করতে গেলে একটু সময় লাগে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, তদন্ত কমিটি দ্রুত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy