বাংলাদেশে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারত-বিদ্বেষ। মৌলবাদী নেতাদের মুখে নিত্যদিন ‘সেভেন সিস্টার্স’ আলাদা করার হুমকি কিংবা ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান শোনা যাচ্ছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। মুখে আস্ফালন করলেও বাস্তবে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা এতটাই যে, নয়াদিল্লি যদি একবার রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে কয়েক সপ্তাহও চলতে পারবে না ওপার বাংলা।
ভারতের ওপর কতটা নির্ভরশীল বাংলাদেশ? বাণিজ্যিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অত্যন্ত জরুরি প্রায় প্রতিটি পণ্যের জন্যই ঢাকাকে ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। ভারত থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে যায়:
-
তুলোর সুতো: ২.৭০ বিলিয়ন ডলার (যা সেদেশের পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড)।
-
পেট্রোলিয়াম পণ্য: ১.২৯ বিলিয়ন ডলার।
-
বিদ্যুৎ শক্তি: ১.০৮ বিলিয়ন ডলার।
-
খাদ্যশস্য: ২০২৪ অর্থবর্ষে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ চাল (৮৪.৫৫ মিলিয়ন ডলার), গম (৭৩৪.৫৪ মিলিয়ন ডলার) এবং চিনি রফতানি হয়েছে।
-
অন্যান্য: যন্ত্রপাতি ও ব্রয়লার (৫০৬.৪৩ মিলিয়ন ডলার), অর্গানিক কেমিক্যালস (৩৮৩.৫৫ মিলিয়ন ডলার)।
সরকারের দ্বিচারিতা: মৌলবাদী নেতারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিলেও বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেউদ্দিন আহমেদ কিন্তু বাস্তববাদী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে কোনও সমস্যা হবে না। এমনকি জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত থেকে আরও ৫০,০০০ মেট্রিক টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অর্থাৎ, রাজপথে ভারত-বিরোধী স্লোগান তুলে জনতাকে তাতানো হলেও, সচিবালয়ে বসে ভারতের কাছেই সাহায্যের হাত পাততে হচ্ছে ইউনূস প্রশাসনকে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ছাড়া বাংলাদেশের বাজার ও অর্থনীতি কার্যত পঙ্গু হয়ে পড়বে।