রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বলাই’ গল্পের বৃক্ষপ্রেম যেন এবার বাস্তব হয়ে ধরা দিল ছত্তিশগড়ে। নিজের হাতে লাগানো একটি মহীরুহ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে শুনে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন এক অশীতিপর বৃদ্ধা। তাঁর এই ‘হৃদয়বিদারক’ কান্নার ভিডিওটি এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল, যা শেয়ার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বয়সের ভারে নুব্জ বৃদ্ধা কেটে ফেলা গাছের গুঁড়িতে মাথা ঠেকিয়ে কেঁদেই চলেছেন। এ যেন সন্তানের শোক!
কেন কেঁদেছিলেন বৃদ্ধা?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এই ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “খুবই হৃদয়বিদারক ঘটনা। ২০ বছর আগে এই গাছটিকে চারা অবস্থায় পুঁতেছিলেন, আজ সেটি মহীরুহ হয়ে উঠেছিল। সেই গাছ কেটে ফেলায় যেভাবে কেঁদে চলেছেন বৃদ্ধা, তা বাকিদের চোখে জল আনতে বাধ্য।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভিডিওর ওই বৃদ্ধার নাম দেওলা বাই, বয়স ৮৫ বছর। জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত লাভের জন্যই অশ্বত্থ গাছটি কেটে ফেলা হয়। প্রায় দু’দশক ধরে সন্তানের স্নেহে লালন করা গাছটিকে হারিয়ে তাঁর এই আকুল কান্না ‘হৃদয়বিদারক’ মানছেন সকলেই।
This is such heart-wrenching scene!
𝐀𝐧 𝐞𝐥𝐝𝐞𝐫𝐥𝐲 𝐰𝐨𝐦𝐚𝐧 𝐰𝐞𝐞𝐩𝐬 𝐛𝐢𝐭𝐭𝐞𝐫𝐥𝐲- 𝐚𝐟𝐭𝐞𝐫 𝐏𝐞𝐞𝐩𝐚𝐥 𝐭𝐫𝐞𝐞 𝐬𝐡𝐞 𝐩𝐥𝐚𝐧𝐭𝐞𝐝 𝟐𝟎 𝐲𝐞𝐚𝐫𝐬 𝐚𝐠𝐨 𝐢𝐬 𝐜𝐮𝐭 𝐝𝐨𝐰𝐧😢
I’m told this occurred in the State of Chhattisgarh. #EkPedMaaKeNaam pic.twitter.com/7UeuSSmKAr— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) October 11, 2025
গ্রামের এক বাসিন্দা, প্রমোদ পটেলের অভিযোগ অনুসারে, ৫ অক্টোবর সকালে, খায়রাগড়ের ইমরান মেমন তার এক সহযোগীকে নিয়ে এই গাছটি কাটার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করে তাদের থামায়। কিন্তু পরদিন সকালেই দেখা যায় গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।
পুলিশি পদক্ষেপ ও অভিযুক্ত গ্রেফতার
গ্রামের বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। খয়রাগড়-ছুইখাদান-গণ্ডাই (কেসিজি) জেলার পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার: অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে মেমনের সম্প্রতি কেনা একটি প্লটের সামনে অবস্থিত সরকারি জমি সমান করতে তারা গাছটি কেটেছিল।
মামলা: অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের (বিএনএস) একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে কৃতকর্মের জন্য ২৯৮ নম্বর ধারা এবং অনিষ্ট সাধনের জন্য ২৩৮ নম্বর ধারা।
জানা গেছে, অভিযুক্তরা কাটার যন্ত্রটি নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ। সেটি সনাক্ত করার জন্য ডুবুরিদের মোতায়েন করা হয়েছে।