মহাকাশে মেথি ও ছোলা নিয়ে শুভাংশুর গবেষণা, ISS-এ ভারতীয় নভোচারীর অভিনব পদক্ষেপ, নতুন দিশা খাদ্য সুরক্ষায়

ভারতের ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিয়ে ফেলেছেন লখনউয়ের কৃতি সন্তান শুভাংশু শুক্লা। দেশের দ্বিতীয় মহাকাশচারী হিসেবে এবং প্রথম ভারতীয় যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) প্রবেশ করেছেন, সেই শুভাংশু এখন মহাকাশে এক অভিনব গবেষণা চালাচ্ছেন— মেথি ও ছোলার বীজের অঙ্কুরোদ্গম নিয়ে! তাঁর এই গবেষণা আগামী দিনে গভীর মহাকাশযাত্রায় নভোচারীদের খাদ্য সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের গর্ব শুভাংশু: রাকেশ শর্মার পর এক নতুন ইতিহাস

রাকেশ শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে পৌঁছেছেন শুভাংশু শুক্লা, যা নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য এক বিরাট গর্বের বিষয়। অ্যাক্সিওম-৪ স্পেস মিশনে আরও তিন মহাকাশচারীর সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রেখেছেন। তবে সেখানে পৌঁছেই তিনি শুধু বসে নেই, একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রধান গবেষণার বিষয় হলো, মহাকাশের আরও গভীরে পৌঁছতে গেলে মহাকাশচারীদের খাবার কতটা নিরাপদ ও সহজলভ্য করা যায়।

মহাকাশে সবজি ফলানোর স্বপ্ন: মেথি ও ছোলার অঙ্কুরোদ্গম

এই লক্ষ্যেই শুভাংশু এবার মেথি এবং ছোলা নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন। মহাকাশের বিশেষ পরিবেশে মেথি ও ছোলার বীজের অঙ্কুরোদ্গম সম্ভব হচ্ছে কি না, বা হলেও কীভাবে হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখছেন তিনি। ১৪ দিনের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানকালে শুভাংশু আদপে আগামী দিনে মহাকাশচারীদের খাবারের গুণমান কেমন হবে, সে বিষয়েই অনুসন্ধান করছেন। এর উদ্দেশ্য হল, যাতে দীর্ঘ মহাকাশযাত্রার সময় যানের মধ্যেই কিছু খাবার সংরক্ষণ ও অঙ্কুরোদ্গম করা যায়।

এমনকি মহাকাশে এই অঙ্কুরোদগত বীজগুলি ছোট ছোট গাছে রূপান্তরিত করা যায় কিনা, তাও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন শুভাংশু। যদি এটি সম্ভব হয়, তবে আগামী দিনে মহাকাশচারীরা তাঁদের প্রয়োজনীয় খাবার মহাকাশেই ফলিয়ে নিতে পারবেন, যা তাঁদের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

দীর্ঘ মহাকাশযাত্রায় খাদ্য সমস্যার সমাধান

দীর্ঘদিনের মহাকাশযাত্রার ক্ষেত্রে পৃথিবীর থেকে খাবার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া একটি অত্যন্ত কঠিন এবং সীমিত কাজ। সেখানে যদি মহাকাশচারীরা মহাকাশেই নিজেদের খাবার ফলিয়ে নিতে পারেন, তবে তা দীর্ঘ যাত্রাকে অনেক সহজ করে দেবে এবং মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। শুভাংশুর এই অভিনব গবেষণা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যৎ মহাকাশ অভিযানকে আরও বাস্তবসম্মত ও স্বাবলম্বী করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy