২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের রণভেড়ি কি তবে বেজে গেল? তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা জোড়া গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। বছরের শেষে যখন গোটা রাজ্য উৎসবের মেজাজে, তখন দলকে একেবারে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে দুটি মেগা ভার্চুয়াল সভার ডাক দিয়েছেন তিনি। মূলত রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের প্রচার এবং ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন (SIR) ঘিরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির মোকাবিলাই এই দুই বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য।
২৬ ডিসেম্বর: উন্নয়নের পাঁচালি ও রিপোর্ট কার্ড আগামীকাল, ২৬ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠকে বসবেন অভিষেক। এই সভায় দলের প্রায় ৫ হাজার জনপ্রতিনিধি ও পদাধিকারী উপস্থিত থাকবেন। এখান থেকেই শুরু হবে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ কর্মসূচি। অভিষেক স্পষ্ট নির্দেশ দেবেন যে, গত ১৫ বছরে রাজ্য সরকার কী কী কাজ করেছে, তার একটি ‘রিপোর্ট কার্ড’ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছাতে হবে। তৃণমূলের প্রধান অস্ত্র হলো—কেন্দ্রীয় সরকার টাকা আটকে রাখা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পগুলো সচল রেখেছেন, সেই বার্তা ভোটারদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া।
২৮ ডিসেম্বর: ১ লক্ষ বিএলএ-র সঙ্গে মেগা বৈঠক তবে সবথেকে বড় চমক থাকছে ২৮ ডিসেম্বর। তৃণমূলের ইতিহাসে এটিই হতে চলেছে বৃহত্তম ভার্চুয়াল বৈঠক। প্রায় ১ লক্ষ বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA-2) এই সভায় যুক্ত হবেন। এর আগে সর্বাধিক ২৫ হাজার কর্মী নিয়ে এমন বৈঠক হয়েছিল। বর্তমানে রাজ্যে ভোটার তালিকার ‘শুনানি’ বা হিয়ারিং নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বহু বৈধ ভোটারের নাম ‘মৃত’ বা ‘স্থানান্তরিত’ দেখিয়ে বাদ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন বারবার নির্দেশিকা বদলানোয় (২৪ বার) বুথ স্তরে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা রুখতে বিএলএ-দের চূড়ান্ত রণকৌশল বাতলে দেবেন অভিষেক।
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি নিজেদের লোক ঢোকানোর জন্য বিএলএ-২ নিয়োগের নিয়মে বদল এনেছে। নামের বানান ভুল বা ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে অমিলের অজুহাতে বৈধ ভোটারদের হেনস্থা করার প্রতিবাদে প্রয়োজনে রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে ২৮ ডিসেম্বরের বৈঠক থেকে বুথ স্তরে লড়াইয়ের জন্য অভিষেক কী নির্দেশ দেন, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।