প্রকৃতির এক অদ্ভুত দান হলো ব্রহ্মপুত্র নদ। সাধারণত নদীর জল স্বচ্ছ বা নীলচে হলেও, বর্ষাকালে ব্রহ্মপুত্রের জল ধারণ করে এক উজ্জ্বল লালচে-বাদামি রঙ। আর এই কারণেই একে ভারতের ‘লাল নদী’ বলা হয়।
কেন এই লাল রঙ? ব্রহ্মপুত্রের তীরে, বিশেষ করে অসম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লৌহসমৃদ্ধ মাটি (Iron-rich soil) রয়েছে। বর্ষাকালে প্রবল বৃষ্টির ফলে এই মাটি ধুয়ে নদীতে মিশে যায়, যা নদের জলকে লালচে করে তোলে। এছাড়া লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কামাখ্যা মন্দিরের অম্বুবাচী উৎসবের সময় এই নদ লাল বর্ণ ধারণ করে বলে মনে করা হয়।
এক নদ, অনেক নাম: ব্রহ্মপুত্র বিশ্বের সেই বিরল নদীগুলোর একটি যার নাম পুংলিঙ্গবাচক। তিব্বতের হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর বিভিন্ন দেশে এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত:
-
তিব্বত: ইয়ারলুং সাংপো।
-
অরুণাচল প্রদেশ: সিয়াং।
-
অসম: ব্রহ্মপুত্র।
-
বাংলাদেশ: যমুনা।
বিস্ময়কর কিছু তথ্য:
-
মাজুলি দ্বীপ: ব্রহ্মপুত্রের বুকেই রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম নদী দ্বীপ ‘মাজুলি’, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈষ্ণব সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত।
-
বিশালতা: অসমের কিছু জায়গায় এই নদ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত চওড়া! এক পাড়ে দাঁড়িয়ে অন্য পাড় দেখা প্রায় অসম্ভব।
-
গভীরতম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন: তিব্বতে এই নদ যে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তা আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের চেয়েও গভীর ও দীর্ঘ।
বিপন্ন গাঙ্গেয় ডলফিনের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এই নদ যেমন ধ্বংসাত্মক বন্যার রূপ নেয়, তেমনই উর্বর পলি দিয়ে কৃষিভূমিকে সমৃদ্ধ করে তোলে।