দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট (LCA) তেজস মার্ক ২ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন নিয়ে চলা সব জল্পনার অবসান ঘটাল হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)। ফরাসি ইঞ্জিন ব্যবহারের আলোচনা নিয়ে চলা সমস্ত খবর খারিজ করে দিয়ে HAL-এর চেয়ারম্যান ডিকে সুনীল স্পষ্ট জানিয়েছেন, দেশীয় ফাইটার প্রোগ্রামের জন্য ফরাসি ইঞ্জিন ব্যবহারের কোনও আলোচনাই চলছে না।
ইঞ্জিন নিয়ে HAL চেয়ারম্যানের চূড়ান্ত বার্তা
এএনআই সূত্রে খবর, ডিকে সুনীল জানিয়েছেন, তেজসের মার্ক ২ বিমানের নকশা তৈরিই হয়েছে জিই ৪১৪ ইঞ্জিনকে মাথায় রেখে। তিনি আরও যুক্ত করেন, “ইঞ্জিন আগে থেকে ঠিক না করে বিমান তৈরি করা যায় না। কোনও গাড়ির ইঞ্জিনও হঠাৎ করে কি বদলে দেওয়া যায়? আর এটা তো যুদ্ধবিমান!” এর মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট করেন যে, তেজস মার্ক ২-এর জন্য আমেরিকান জেনারেল ইলেক্ট্রিকের (GE) ইঞ্জিনই চূড়ান্ত।
বর্তমানে জেনারেল ইলেক্ট্রিকের সঙ্গে জিই ৪১৪ ইঞ্জিন নিয়ে HAL-এর আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই আমেরিকাতে এ নিয়ে আরও একবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে। ডিকে সুনীল আশা করছেন, এই আলোচনায় বিশ্ব বাণিজ্যের শুল্ক-নীতি কোনও প্রভাব ফেলবে না।
১১৩টি ইঞ্জিনের জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি
সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৯৭টি তেজস মার্ক ১ বিমানের ৬২ হাজার কোটি টাকার চুক্তি ঘোষণার পরই আরও একটি বড় চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে HAL। জানা যাচ্ছে, মার্ক ১ বিমানের জন্য আরও ১১৩টি জিই ৪০৪টি ইঞ্জিনের জন্য অক্টোবর মাসেই চুক্তি সই হবে। এই চুক্তির অর্থমূল্য ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আত্মনির্ভরতার পথে ভারত: ৭০% ‘লোকালাইজেশন’
এই নতুন ফাইটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে ভারত আত্মনির্ভরতার পথে বড় পদক্ষেপ করছে। নতুন তেজস মার্ক ১ যুদ্ধবিমানে ৭০ শতাংশ ‘লোকালাইজেশন’ হবে বলে জানা গিয়েছে। HAL চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী, এই বিমান তৈরির ৫০ শতাংশ জিনিসপত্র বিভিন্ন বেসরকারি দেশীয় সংস্থা থেকে কেনা হবে। এর ফলে দেশের বেসরকারি শিল্প একটি গতি পাবে এবং দেশের যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।