বৌভাতের দিন প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার ধর্না, পাঁশকুড়ায় ধুন্ধুমার, সম্পর্কের জটিল জালে বিপাকে পুলিশ

বিয়ের দিনে চরম নাটকীয়তার সাক্ষী হলো পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার পীতপুর। বৌভাতের দিনেই প্রেমিকের বাড়িতে ধর্নায় বসলেন প্রাক্তন প্রেমিকা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি, যা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। এই ঘটনা এখন স্থানীয় থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও আলোচনার বিষয়।

জানা গেছে, ২০২১ সালে পীতপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় মাইতির সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের সামাটের এক তরুণীর বিয়ের জন্য দেখাশোনা হয়। সেই সময় মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় উভয় পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় যে, মেয়েটি সাবালিকা হলে তাদের বিয়ে দেওয়া হবে। এই দেখাশোনা থেকেই সঞ্জয় ও ওই তরুণীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

অভিযোগকারী তরুণীর দাবি, “সঞ্জয় আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি যখন বিয়ের জন্য উপযুক্ত হই, তখন আমি সঞ্জয়কে বারবার বিয়ের কথা বলি, কিন্তু ও নানা অজুহাত দিতে থাকে।” এরপর তিনি দাসপুর থানা এবং আদালতের দ্বারস্থ হন। যদিও সেই সময় অভিযুক্ত সঞ্জয় জামিন পেয়ে যান।

গতকাল, এই সমস্ত টানাপোড়েনের মধ্যেই সঞ্জয় অন্য একটি মেয়েকে মন্দিরে বিয়ে করেন। এই খবর কানে যেতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রাক্তন প্রেমিকা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জয়ের পৈতৃক বাড়িতে এসে ধর্নায় বসেন। সেই সময় সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অভিযোগকারিণীর তীব্র বচসা ও হাতাহাতি শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

পুলিশ দু’পক্ষের কথা শোনার পর ওই তরুণীকে থানায় নিয়ে আসে। থানায় তিনি সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তরুণী বলেছেন, “অভিযুক্ত সঞ্জয় দীর্ঘ চার বছর সম্পর্কে থেকে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। আমি চাই ও আমাকে বিয়ে করুক, নাহলে ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

যদিও সঞ্জয়ের পরিবার ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তাদের দাবি, “আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য এইভাবে চক্রান্ত করছে মেয়েটি।”

এই ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ভালোবাসার সম্পর্কের এমন মর্মান্তিক পরিণতি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ঘটনা বিবাহ এবং সম্পর্কের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy