শীতের আমেজ শুরু হতেই পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা, বিশেষত আম্বিডাঙ্গর গ্রামে প্রতি বছরই ভিড় করে ভিনদেশি পাখির দল। তবে এবার সেই চেনা ছবিতে আচমকা নেমে এল এক মর্মান্তিক ছায়া— রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে একের পর এক পরিযায়ী পাখি।
হেমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের আম্বিডাঙ্গর গ্রামে যত্রতত্র পরিযায়ী পাখিদের মৃতদেহ দেখা যাওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। পরিযায়ী পাখির মৃত্যু রুখতে সোমবার দুপুরে সেই ঘটনাস্থলে দেখা গেল ব্যাপক প্রশাসনিক তৎপরতা।
বিষ প্রয়োগের সন্দেহ, অভিযানে দমকল:
মৃত পাখি পাওয়া গেছে এমন গাছ ও সংলগ্ন জঙ্গল এলাকাগুলোতে জল দিয়ে পুরো অঞ্চল পরিষ্কার করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়্গপুর দমকল বিভাগের একটি ইঞ্জিন।
দমকল কর্মী তীর্থঙ্কর ভূঁইয়া বলেন, “বন দফতরের তরফ থেকে আমাদের ফোন করা হয়েছিল। গাছে কেউ বা কারা বিষ প্রয়োগ করেছে। আমরা জল দিয়ে স্প্রে করেছি এবং গাছে বেশ কয়েকটি মৃত পাখিও দেখতে পাওয়া গেছে। যে গাছটিতে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি, সেই গাছটি সহ পাশাপাশি এলাকাতেও জল স্প্রে করা হয়েছে।” গাছগুলি পরিষ্কার করার সময় আরও বেশ কিছু সংখ্যক মৃত পাখি উদ্ধার হয়।
তদন্তে বন দফতর:
খড়্গপুর বনবিভাগ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মঞ্চের স্থানীয় শাখাগুলির উদ্যোগে এলাকায় মাইকিং করে পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়।
বেলদা বন বিভাগের রেঞ্জার তৌহিদ আনসারিও বিষ প্রয়োগের সন্দেহ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “একটি গাছে কেউ বা কারা বিষ প্রয়োগ করেছে। বেশ কিছু পাখি মারা গিয়েছে। আমরা এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার করেছি। গাছে জল স্প্রে করা হয়েছে। কে বা কারা গাছে বিষ প্রয়োগ করল, তার তদন্ত চালানো হচ্ছে।”
বন দফতরের আধিকারিক জানিয়েছেন, বিলুপ্ত পরিযায়ী পাখি নিধন রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও এখনও এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানা গিয়েছে।