বিহার বিধানসভা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনা। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আসন ভাগাভাগির পাশাপাশি দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে টিকিট বিতরণ নিয়ে একাধিক ক্ষোভ-বিক্ষোভের ঘটনা সামনে আসছে।
সম্প্রতি এনডিএ-এর (NDA) তরফে বিহারে আসন সমঝোতা বা সিট ভাগাভাগি চূড়ান্ত হয়েছে। এবারের ভোট যুদ্ধে বিজেপি এবং নীতীশ কুমারের জেডিইউ (JDU) লড়বে ১০১টি করে আসনে। অন্যদিকে, চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি ২৯টি, উপেন্দ্র কুশওয়াহার আরএলএম ৬টি এবং জীতেন রাম মাঁঝির হ্যাম লড়বে ৬টি আসনে।
আর এই ঘোষণার পর থেকেই দলগুলো নিজেদের প্রার্থীদের টিকিট দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে। এই কাজটি করতে গিয়েই বড় ধরনের বিপাকে পড়েছে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)।
সোমবার বিহারে নীতীশ কুমারের বাসস্থানে গিয়ে হাজির হন একাধিক জেডিইউ নেতা ও তাঁদের সমর্থকরা। অভিযোগ, টিকিট না পাওয়ার কারণেই এই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নীতীশের বাসস্থানের বাইরে দড়ি টাঙিয়ে বিক্ষোভকারীদের দূরে রাখার চেষ্টা করে পুলিশ। পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত নেতা ও কর্মীদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়।
যদিও পুলিশের এই কথা মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধরা। বরং তাঁরা সেখানেই ধর্নায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এখন দেখার এই টিকিট-সংক্রান্ত ক্ষতে ঠিক কীভাবে প্রলেপ লাগান জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ কুমার। অন্যদিকে, বিজেপি বা জোটের অন্য শরিকদের মধ্যে এখনও প্রার্থী বাছাই নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা দেখা যায়নি।
এনডিএ-এর মতো INDIA জোটেও আসন ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। লালু-তেজস্বীর রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেসের মধ্যে এখনও সিট ভাগাভাগি নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে।
কংগ্রেস প্রাথমিকভাবে ৭০টি আসন দাবি করেছিল এবং ৬১-৬৩-এর কমে তারা কিছুতেই মীমাংসা করতে চাইছে না। তবে, ২০২২ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের দুর্বল ফলাফলের কারণে আরজেডি এই দাবি মানতে নারাজ। এই বিষয়ে এখনও কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। এমন অবস্থায় কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা না করেই লালু প্রসাদ যাদব তাঁর দলের প্রার্থীদের টিকিট দিতে শুরু করেছিলেন বলে খবর। তবে, পরে ছেলে তেজস্বী যাদবের হস্তক্ষেপে তিনি আপাতত সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছেন।
জোটের টানাপোড়েনের মাঝেই কংগ্রেস নিজেদের সম্ভাব্য সিটে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। এখন দেখার নভেম্বর ৬ এবং নভেম্বর ১১-এর ভোটের আগে জোটের এই দুই পক্ষ কীভাবে তাদের ঘর গুছিয়ে নেয়।