বিহারে ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (Special Intensive Revision – SIR) প্রক্রিয়ার পর অবশেষে সংশোধিত ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ বিকেল ৩টায় কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://voters.eci.gov.in) আপলোড করা হবে এই খসড়া, যা ইতিমধ্যেই স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার পর বিহারের ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে, যা রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে, গত ২৪শে জুন থেকে শুরু হওয়া SIR প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, বিহারের ৭.৮৯ কোটি নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৭.২৪ কোটিরও বেশি ভোটার তাদের গণনা ফর্ম জমা দিয়েছেন। এর অর্থ হল, প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটার গণনা ফর্ম জমা দেননি, ফলে তাদের নাম ১লা আগস্ট প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিশাল সংখ্যক ভোটারের নাম বাদ পড়ার মূল কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ভোটারের মৃত্যু, স্থায়ী স্থানান্তর এবং একাধিক স্থানে রেজিস্টার থাকা। ৩০শে সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
দাবি ও আপত্তি জানানোর সুযোগ:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (CEC) জ্ঞানেশ কুমার আশ্বস্ত করেছেন যে, ১লা আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধিত ভোটার তালিকার উপর দাবি এবং আপত্তি জমা নেওয়া হবে। যারা খসড়া তালিকায় নিজেদের নাম খুঁজে পাবেন না, তারা এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাতে পারবেন।
রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক:
ভোটার তালিকা থেকে বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এই ঘটনাকে ‘ভোটার চুরি’ আখ্যা দিয়ে সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন, “ভোটার চুরি করে কমিশন। কে করাচ্ছে? বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে ভোটচুরি নিয়ে আমাদের সন্দেহ ছিল। আমরা নিজেরাই তদন্ত করি। তাতে ৬ মাস লেগেছে।”
অন্যদিকে, বিহারের জেলা নির্বাচন অফিসার (DEO) ৩৮টি জেলার সমস্ত স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের কাছে খসড়া পাঠিয়েছে বলে জানানো হয়েছে, যাতে তারা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপকে ‘স্বচ্ছতা’ আনার প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হলেও, বিরোধী দলগুলির ‘ভোটার চুরি’র অভিযোগ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।