বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে বিশেষ প্রতিবেদন ভরতপুরের অভয়ারণ্যে কৃত্রিম বাঁধেই তৈরি হয়েছিল UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ!

যখন বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন রাজস্থানের ভরতপুরে অবস্থিত কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান প্রকৃতি এবং মানুষের তৈরি জল ব্যবস্থাপনার এক অসাধারণ সংমিশ্রণের উদাহরণ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। প্রায় $29$ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই জলাভূমিটি শুধুমাত্র ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবেই তালিকাভুক্ত নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে অনন্য অভয়ারণ্যগুলির মধ্যে একটি হিসাবেও বিবেচিত হয়। এই পার্কের সমগ্র বাস্তুতন্ত্র টিকে আছে জলের সহজলভ্যতার উপর।

কেওলাদেও-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর জল ব্যবস্থাপনা, যা সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক বা সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম নয়। এটি আসলে এমন একটি মিশ্রণ যা রাজস্থানের প্রাচীন ইতিহাস ও স্থানীয় জ্ঞানকে প্রতিফলিত করে।

মহারাজা সুরজমলের জল-প্রকৌশল

আঠারো শতকে, ভরতপুরের তৎকালীন মহারাজা সুরজমল গম্ভীরী এবং বণগঙ্গা নদীর প্রবাহ গভীরভাবে অধ্যয়ন করেন। সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে তিনি পরবর্তীতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো নির্মাণ করেন: কোহনি বাঁধ এবং আজান বাঁধ

এই বাঁধগুলোর পাশাপাশি, সেওয়ালা হেড থেকে একটি প্রধান খাল তৈরি করা হয়েছিল। এই খালটি বৃষ্টির জলকে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পার্কের বিভিন্ন অংশে প্রবাহিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়। সমগ্র জলাভূমি এলাকাটিকে আটটি বৃহৎ জল ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছিল। এই ব্লকগুলিতে প্রথমে জল সংরক্ষণ করা হত এবং পরে ধীরে ধীরে সেই জল ছোট ছোট ব্লকে ছেড়ে দেওয়া হত। এটি ছিল সেই যুগের একটি অনন্য জল প্রকৌশল, যার মাধ্যমে এক শুষ্ক অঞ্চলে একটি স্থায়ী এবং সমৃদ্ধ জলাভূমি তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। এটি প্রমাণ করে, ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও আধুনিক কৌশল কীভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একযোগে কাজ করতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy