বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। রাজধানী কলকাতাতেও এই উৎসবের সময়ে জনসমুদ্র তৈরি হয়, যেখানে শুধু শহরের নয়, বাইরের জেলা থেকেও অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন। এই বিপুল জনসমাগম সামলে শহর কলকাতাকে নির্বিঘ্নে সচল রাখার কঠিন পরীক্ষায় এবারও সফলভাবে পাশ করে গেল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)।
লালবাজারের ‘হোমওয়ার্ক’ ও দক্ষ প্ল্যানিং
দুর্গাপূজা কলকাতা পুলিশের কাছে এক বিশাল পরীক্ষা হলেও, লালবাজারের আগাম ও উপযুক্ত পরিকল্পনাই এবার সাফল্য এনে দিয়েছে। লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা আগে থেকেই পুরো পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিলেন:
ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ: কোথায় ব্যারিকেড হবে, কোন রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলবে, কোথায় পার্কিং লট হবে—এ সবই ছিল নিখুঁত পরিকল্পনার ফসল। কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশ রীতিমতো দক্ষতার সঙ্গে পুজোর যানজট সামলে উঠেছে।
ভিড় নিয়ন্ত্রণ: দক্ষিণের ত্রিধারা সম্মিলনী, বালিগঞ্জ কালচারাল, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ থেকে উত্তরের টালা প্রত্যয়, আহিরীটোলা বা কাশী বোস লেনে বিপুল ভিড় থাকা সত্ত্বেও লাইন কন্ট্রোল ছিল দারুণ।
উচ্চপদস্থ তদারকি: চতুর্থী থেকেই লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় নেমে তদারকি করেছেন। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজেও পুজোর দিনগুলিতে একাধিক মণ্ডপে পৌঁছে যান।
সৈন্য ও সহযোদ্ধারা
লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, চতুর্থী থেকেই প্রায় ১০,০০০ পুলিশকর্মীকে রাস্তায় নামানো হয়েছিল। সপ্তমী থেকে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়। তাদের সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে গেছে এনসিসি-র ছেলেমেয়েরা। কলকাতাকে সচল রাখার পিছনে তাদের অবদানও অনস্বীকার্য।
বেহালার নতুন দল, ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক সহ একাধিক মণ্ডপে মানুষের জনজোয়ার হলেও, পুলিশি তৎপরতার কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দিনরাত এক করে কাজ করে কলকাতার ট্র্যাফিক সিস্টেমকে সচল রাখা এবং জনসমুদ্র সামলে ঐতিহ্যের ‘KP’ আবারও চ্যাম্পিয়নের তকমা ধরে রাখল।