বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে চরম পারিবারিক কলহের পর মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলায় একই পরিবারের চার সদস্য গণ-আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ মনোহর লোধি (৪৫), তাঁর মা ফুলরানি (৭০), মেয়ে শিবানী (১৮) এবং মনোহরের ১৬ বছরের এক ছেলেসহ চারজনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় মনোহরের স্ত্রী দ্রৌপদী এবং তাঁর প্রেমিক সুরেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মনোহর লোধির ছোটবেলার বন্ধু সুরেন্দ্রর সাথে তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদীর একটি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সুরেন্দ্র প্রায়শই মনোহরের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। মনোহরের অনুপস্থিতিতে দ্রৌপদী ও সুরেন্দ্রর মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হয়। সম্প্রতি, দ্রৌপদী এবং সুরেন্দ্রকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন তাঁদের মেয়ে শিবানী। শিবানী সেই ঘটনার ভিডিও তুলে তার বাবাকে দেখান। এরপরই পুরো পরিবারে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
পারিবারিক অশান্তি ও আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত
ভিডিওটি দেখার পর মনোহর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরিবারের সম্মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তাঁর মা ফুলরানিও খুব হতাশ হয়ে পড়েন। মনোহর তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদীকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু দ্রৌপদী তাতে রাজি হননি। উল্টো তিনি মনোহরকে মিথ্যা পণের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর মনোহর তাঁর বন্ধু সুরেন্দ্রর সঙ্গেও কথা বলেন, কিন্তু সুরেন্দ্রও দ্রৌপদীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাজি হননি। স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতা এবং মিথ্যা মামলার হুমকির জেরে মনোহর চরম পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত ২৫ জুলাই গভীর রাতে মনোহর তাঁর মা, মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পুলিশের পদক্ষেপ
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে চারজনের দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিক তদন্তে এটি গণ-আত্মহত্যার ঘটনা বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই দ্রৌপদী এবং সুরেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে, যার মধ্যে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।