উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে বিপর্যয়ের ধাক্কা এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে ফের ধস নামায় বাংলা ও সিকিমের লাইফ-লাইন ১০ নং জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল NHIDCL কর্তৃপক্ষ। ২৯ মাইল এবং গেইলখোলার মাঝে নতুন করে ধস নামার কারণে সড়ক সংস্কারের জন্য আজ, সোমবার দুপুর ১টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে যান চলাচল বন্ধ থাকবে এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে।
গত সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে ২৯ মাইলে একমুখী যান চলাচল শুরু হলেও, এবার সড়কের বড় আকারের সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণভাবে রাস্তা বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেছে।
পর্যটকদের জন্য বিকল্প রুট:
যেহেতু এই সড়কটি সিকিম এবং কালিম্পং যাওয়ার প্রধান পথ, তাই পর্যটকদের জন্য বেশ কয়েকটি বিকল্প রুটের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ:
শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং যাওয়ার রুট:
১. শিলিগুড়ি-কার্শিয়ং-জোরবাংলো-পেশক-তিস্তাবাজার-চিত্রে-কালিম্পং
২. শিলিগুড়ি-সেবক-গরুবাথান-লাভা-আলগাড়া-২১মাইল-কালিম্পং
শিলিগুড়ি থেকে সিকিম (গ্যাংটক) যাওয়ার রুট:
১. শিলিগুড়ি-কার্শিয়ং-জোরবাংলো-পেশক-তিস্তাবাজার-চিত্রে-রংপো-গ্যাংটক
২. শিলিগুড়ি-সেবক-গরুবাথান-লাভা-আলগাড়া-২১মাইল-মঙসঙ-রংপো-গ্যাংটক
উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ের করুণ চিত্র:
অন্যদিকে, গত শনিবারের প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের সমতল এবং পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বালাসন নদীর জল এখনও ফুঁসছে, যার কারণে বাগডোগরার এমএম তরাই গ্রামের বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। নদীর পাড় ভেঙে গেলে যেকোনো মুহূর্তে সবকিছু ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিপর্যয়ের জেরে বন্যপ্রাণীদের জীবনও বিপন্ন। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। নদীর জল কমতেই ভেসে উঠছে মৃত বন্যপ্রাণীর দেহ। কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে একটি গণ্ডারকে উদ্ধার করে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়া জংলি শুয়োরের তাণ্ডবে ধূপগুড়িতে চারজন আহত হয়েছেন। জলদাপাড়া জঙ্গল লাগোয়া শিমলাবাড়িতে কুনকি হাতি নামিয়ে সোমবার আরও একটি গন্ডার উদ্ধার করা হয়েছে।