বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমী বা দশেরা উপলক্ষে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আর্টিলারি রেজিমেন্টের জওয়ানরা সামিল হলেন তাঁদের ঐতিহ্যবাহী অস্ত্র পুজোয়। রামায়ণ ও মহাভারতের সময় থেকে চলে আসা এই ঐতিহ্যকে সামনে রেখে জওয়ানরা দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা করার পাশাপাশি ফুল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে প্রতিটি অস্ত্রের পূজা করেন।
অস্ত্র পুজো চলাকালীন বাহিনীর জওয়ানদের ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বিএসএফ জিন্দাবাদ’ এবং ‘আর্টিলারি রেজিমেন্ট অমর রহে’র মতো ধ্বনি দিতে দেখা যায়।
কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, শত্রুদের কাছে বার্তা
অফিসার শক্তি সিং তানওয়ার বলেন, অস্ত্র পুজোর এই ঐতিহ্য থেকে বিশ্বাস করা হয় যে দেবী দুর্গার আশীর্বাদে যুদ্ধে জয় আসে।
“ছোট অস্ত্র থেকে শুরু করে কামান পর্যন্ত প্রতিটি অস্ত্র গঙ্গার জল দিয়ে শুদ্ধ করে সেগুলিতে সিঁদুরের তিলক পরিয়ে পুজো করা হয় এদিন। এই অনুষ্ঠানটি কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং শত্রুদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা যে ভারতের সীমান্তরক্ষীরা সর্বদা প্রস্তুত।”
স্মরণ করা হলো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য
এবারের বিজয়া দশমীর উৎসবে বিএসএফের সাম্প্রতিক সাফল্যের কথাও উঠে এসেছে। গত এপ্রিলে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের উপযুক্ত জবাব ছিল অপারেশন সিঁদুর।
বিএসএফের আর্টিলারি রেজিমেন্ট এই সময় শত্রুর অস্থায়ী বাঙ্কার এবং চেকপয়েন্টগুলি দক্ষতার সঙ্গে ধ্বংস করেছিল। বিএসএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টা ধরে টানা ফ্রন্ট লাইনে থাকা জওয়ানরা প্রমাণ করে দিয়েছেন, সীমান্ত সুরক্ষা কেবল নজরদারির বিষয় নয়, বরং সাহস এবং দৃঢ়তার পরীক্ষাও বটে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত জওয়ানরা
আরও এক বিএসএফ আধিকারিক রণবিজয় জানান, জয়সলমের ফ্রন্টে মোতায়েন জওয়ানরা এখন অত্যাধুনিক অস্ত্র, নাইট ভিশন ক্যামেরা, ড্রোন এবং র্যাডার সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত।
“মরুভূমির প্রতিকূল আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক একাধিক চ্যালেঞ্জ উড়িয়ে আর্টিলারি রেজিমেন্ট যেকোনো পরিস্থিতিতে শত্রুকে উপযুক্ত জবাব দিতে সক্ষম এবং সদা-প্রস্তুত। এই কারণেই পাকিস্তানের তরফে আসা প্রতিটি হামলার প্রথম এবং নির্ণায়ক জবাব এখান থেকেই দেওয়া হয়ে থাকে।”
বিএসএফ জওয়ানদের কথায়, বিজয়া দশমীর উৎসব তাঁদের মনে করিয়ে দেয় যে, সত্যের কাছে মিথ্যার পরাজয় নিশ্চিত। অস্ত্র পুজো কেবল একটি ধর্মীয় ঐতিহ্য নয়, বরং সীমান্তে যে কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপ সহ্য করা হবে না সেই অঙ্গীকার নেওয়ার দিন।