দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিস্তীর্ণ ধানখেতে দেখা দিয়েছে এক ভয়ংকর রোগ ও পোকার উপদ্রব। বিঘার পর বিঘা জমির ধান গাছের পাতা হয় সাদা হয়ে গিয়েছে, অথবা লালচে রূপ নিয়েছে। এই দৃশ্য দেখে জেলার চাষিদের মধ্যে চরম আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের অনুমান, গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছরে ধানের উৎপাদন অনেকটাই কম হবে। ফলস্বরূপ, লাভের অংশে বড়সড় মার খাবে কৃষকের পরিশ্রম।
বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, হিলি, তপন ব্লক-সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় একই করুণ চিত্র। কৃষকদের দাবি, একটানা বৃষ্টিতে জমিতে জল জমার কারণেই পোকার উপদ্রব বেড়েছে। এই পোকাগুলো পাতার ভেতরের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলায় পাতা সাদা ও শুকনো দেখাচ্ছে। আবার কোথাও গাছের গোড়ায় পোকা ধরে পাতা লাল হয়ে গিয়েছে।
ক্ষতির আশঙ্কায় দিশেহারা চাষিরা
চাষিরা জানাচ্ছেন, জমিতে চাষের জন্য যে বিপুল পরিমাণ খরচ হয়েছে, সেই টাকা ওঠানোই এখন যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাভের অংশ তো অনেক দূরের প্রশ্ন।
স্থানীয় কৃষকরা সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, “যেভাবে পোকার উৎপাত দেখা দিয়েছে, তাতে ধানের উৎপাদন অর্ধেক হবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ হচ্ছে। ভাইরাসের মতো রোগ গাছ নষ্ট করছে। লাভের আশা ছেড়েই দিতে হচ্ছে।”
কৃষি আধিকারিক দিলেন ভরসা! জানালেন মুক্তির উপায়
তবে, কৃষি দফতর এই সমস্যাকে বড় করে দেখতে নারাজ। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য কৃষি আধিকারিক সমীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে চাষিদের আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি বলেন, “এই সমস্যাটা খুব বড় আকারে দেখা দেয়নি। কিছু কিছু জায়গাতেই রোগ, পোকামাকড় হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এর মোকাবিলা করার জন্য চাষিদের বলা হয়েছে।”
সমীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতে, রোগটি নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক সময়ে ছত্রাকনাশক স্প্রে করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, কৃষকরা যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং সচেতন হন, তবে সহজেই এই পোকার উৎপাত দমন করা যাবে। জেলা কৃষি দফতরের পক্ষ থেকেও কৃষকদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, কৃষি আধিকারিকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আশ্বাস দিলেও ফসলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ কাটছে না দক্ষিণ দিনাজপুরের ধান চাষিদের কপালে।